গাজীপুর প্রতিনিধি

  ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

সফিপুরে প্রধানমন্ত্রী

সংকটে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে আনসার-ভিডিপি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতীয় সংকটকালে ও জরুরি মুহূর্তে দক্ষতা ও সফলতার পরিচয় দিয়েছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (ভিডিপি)। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে সরকারপ্রধান বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধেও এ বাহিনী আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সফিপুরে আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাহিনীটির ৩৯তম জাতীয় সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে আনসার-ভিডিপির সালাম গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে প্রধানমন্ত্রী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন এবং আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ তাকে স্বাগত জানান।

বক্তব্যের শুরুতেই ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাষার মাসে ভাষা আন্দোলনে শহীদ আনসার ভিডিপির সদস্য আবদুল জব্বারকে স্মরণ করছি। যিনি মাতৃভাষার মর্যাদা আদায়ে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে, যার নেতৃত্বে আমরা মাতৃভাষায় কথা বলার সুযোগ পেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি। জাতীয় চার নেতাকেও স্মরণ করছি। স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আনসার বাহিনীর ৬৭০ সদস্যকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়েছিল, তখন সেই নতুন সরকারকে গার্ড অব অনার দিয়েছিল এই আনসার বাহিনীই।

আনসার-ভিডিপিকে দেশের সর্ববৃহৎ জনসম্পৃক্ত শৃঙ্খলা বাহিনী উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, সম্প্রতি একাদশ জাতীয় নির্বাচন হলো, যেখানে প্রায় ৫ লাখ আনসার সদস্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন ভোটকেন্দ্র পাহারায় ও ভোটারদের নিরাপত্তার স্বার্থে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে তারা বাংলার জনগণকে সুষ্ঠু একটি নির্বাচন উপহার দিয়েছেন। এই দায়িত্ব পালনকালে পাঁচ আনসার সদস্য জীবন দিয়েছেন। তাদের আমরা আজ মরণোত্তর সাহসিকতা পদক দিয়েছি। ২০১৪-১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত যখন অগ্নিসন্ত্রাস চালায়; ককটেল ও বোমা মেরে রেল, গাড়ি, লঞ্চ, সিএনজি পুড়িয়ে যখন সাধারণ মানুষের চলাচলে বাধার সৃষ্টি করছিল, পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করছিল, তখন অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে রেলের নিরাপত্তায় বিশিষ্ট ভূমিকা রাখে। এই অনবদ্য ভূমিকার জন্য তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তাদের জন্যই আমরা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হই।

দেশকে এগিয়ে নেতে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্জন ধরে রাখতে সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা এরই মধ্যে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এসবের সুফল ভোগ করবে মানুষ। দারিদ্র্যদূরীকরণে বয়স্ক-বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি। কোনো পতিত জমি যেন না থাকে সেজন্য ‘একটি বাড়ি একটি খামার’কে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পে রূপ দিয়ে বাস্তবায়ন করছি। দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এবং আর্থসামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পাঁচজনকে মরণোত্তর পদকসহ ১৫৩জন আনসার সদস্যকে পদক প্রদান করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী আনসার সদস্যদের নিয়ে একটি কেক কাটেন এবং তাদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। তিনি আনসার-ভিডিপি সদস্যদের তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্পের স্টল ঘুরে দেখেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close