নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

দুর্নীতির মামলা

লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিচ্ছে দুদক

দুর্নীতির মামলায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীসহ দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের জমি বেআইনিভাবে বিক্রির মাধ্যমে সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার কমিশন সভায় এ অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়। শিগগিরই বিচারিক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।

দুদক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর বগুড়ার আদমদিঘী থানায় লতিফ সিদ্দিকী ও জাহানারা রশীদ নামের এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও পরস্পর যোগসাজশে সরকারি আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। মামলার তদন্ত করেন বাদী আমিনুল ইসলাম নিজেই।

দুদক সূত্র আরও জানায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রানীনগর বাজারে বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের পাট ক্রয়কেন্দ্র

ছিল। ব্রিটিশ সরকারের সময় ২ একর ৩৮ শতাংশের জমিটি সুরুজ মল আগরওয়ালা নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হুকুম দখল করা হয়েছিল। বগুড়া শহরের কালীতলা এলাকার মৃত হারুন-অর-রশিদের স্ত্রী জাহানারা রশিদ ২০১০ সালের ১৩ মে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে জমিটি তিন বছরের জন্য লিজ নেন। এর জন্য বছরে লিজ মানি ধার্য ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। জাহানারা রশিদ প্রথম বছরের লিজ মানি পরিশোধ না করেই ওই জমি কেনার জন্য ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন।

সরকারি জমি স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দিতে বা বিক্রি করতে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের নিয়ম থাকলেও তখনকার মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী তা করেননি বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়। তিনি তার পরিচিত জাহানারা রশিদের কাছে দরপত্র ছাড়াই বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। লতিফ সিদ্দিকীর একক সিদ্ধান্তে ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৫ টাকা দামের জমিটি মাত্র ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৪ টাকায় বিক্রি করা হয়। এতে সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার ২১ টাকা ১১ পয়সা আর্থিক ক্ষতি হয় বলে এজাহারে বলা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই জমিটি কম দামে বিক্রি করায় নওগাঁর রানীনগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইসমাইল হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন। পরে জাহানারা রশিদ সুপ্রিমকোর্টে আবেদন করলে তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। দুদক ২০১৪ সাল থেকে অনুসন্ধান শুরু করে ২০১৭ সালে এসে মামলাটি করে।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ব্যক্তিস্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হতে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। এতে সাবেক মন্ত্রী ও জাহানারা রশিদের পরস্পর যোগসাজশ ছিল। তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ প্রমাণ পাওয়া গেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close