লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯

শীতে লালমনিরহাটে রোগে আক্রান্তের বেশির ভাগই শিশু

শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লালমনিরহাটে বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। আর এসব রোগের মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্তের শিশুর সংখ্যাই বেশি। গত দুই দিনে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ৩০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ জনই শিশু। তাদের মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগী রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমাইয়া আক্তার।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ফুলগাছ বড়ভিটা এলাকার আবু বক্কর সকিনা দম্পত্তির পাঁচ মাস বয়সি জমজ মেয়ে সুমাইয়া ও সাদিকা গত এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়ায় ভুগছে। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকদের দেওয়া পরামর্শে কয়েকদিন চেষ্টার পর গত সোমবার লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেছেন। কৃষক আবু বক্কর মেয়েদের সুস্থ করতে বাইরে থেকে ৩০০ টাকার ওষুধ ও স্যালাইন কিনে এনেছেন। হাসপাতাল থেকে শুধুমাত্র মুখে খাওয়ার স্যালাইন দিয়েছে দাবি করে আবু বক্কর বলেন, নামে সরকারি হাসপাতাল। সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনে খাওয়াতে হয়। না ডাকা পর্যন্ত নার্স বা চিকিৎসক রোগী দেখেন না বা খোঁজখবর নেন না এখানে।

শহরের খোচাবাড়ি এলাকার রাসেল সরকারের ১১ মাস বয়সী মেয়ে রাদিয়াকে বেলা ১১টায় ডায়রিয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জরুরি বিভাগের লেখা নির্দেশনাপত্র মোতাবেক সাড়ে তিনশ’ টাকার ইনজেকশন ও ওষুধ কিনে এনেছেন শিশুটির পরিবার। কিন্তু ভেইন খুঁজে না পাওয়ায় দেওয়া হয়নি সেই ইনজেকশন। তাকে শুধু খাবার স্যালাইন দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে।

গত রোববার ডায়রিয়ার কারণে সদর হাসপাতালে হারাটি সরকারটারী এলাকার খরজামালের মেয়ে ফাতেমাকে (১০ মাস) ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে বমি বন্ধ হলেও বন্ধ হচ্ছে না শিশুটির পাতলা পায়খানা। অসুস্থ শিশুকে নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন তার পরিবার। সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ জানায়, ৪০ ঘণ্টায় ৬৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে রেফার্ড করা হয় পাঁচজনকে। ভর্তিকৃতদের বেশির ভাগ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। যার অধিকাংশই শিশু। সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমাইয়া আক্তার ডেইলি বাংলাদেশকে জানান, ২৪ ঘণ্টায় শীতজনিত রোগে শিশু ওয়ার্ডে ১৫ জন ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাই বেশি। এছাড়াও মেডিসিন ওয়ার্ডেও শীতজনিত রোগে ১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন মজুদ রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। এছাড়াও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক শিশু জেলার বাকি চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে ভর্তি রয়েছে।

দিনে হালকা রোদ থাকলেও সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়ছে লালমনিরহাট জেলার মানুষ। ঠান্ডায় নিদারুণ কষ্টে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। চরম কষ্টে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া ও চরাঞ্চলের ছিন্নমূল মানুষ। সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ করা অব্যাহত রয়েছে জেলার বিভিন্ন স্থানে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউর আরিফ জানান, শীতবস্ত্র হিসেবে ২৭ হাজার পিস কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি। তার সব বিতরণ করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close