এস এইচ এম তরিকুল, রাজশাহী

  ০৯ জানুয়ারি, ২০১৯

রাজশাহীর ফুটপাতে মিলছে ১০ টাকায় শীতের পোশাক

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাজশাহীতে পড়ছে তীব্র শীত। হু হু করে বয়ে যাওয়া ঠান্ডা বাতাসে জবুথবু হয়ে পড়েছে এ এলাকার মানুষ। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূলরা। গরম পোশাকের অভাবে কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের। শীত নিবারণে নগরবাসী ছুটছে গরম পোশাকের দোকানে। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে কিনছেন শীতের পোশাক। কিন্তু বিত্তবানরা দামি পোশাক কিনলেও সাধারণ খেটে খাওয়ারা গরম কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতে।

হতদরিদ্রের সাধ্যের মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকায় ফুটপাতে মিলছে গরম কাপড়। এই দামের মধ্যে সোয়েটার, টুপি, মাপলার, চিকন জ্যাকেট ও ফুলহাতা গেঞ্জি মিলছে। এমন সস্তায় শীতের পোশাক পেয়ে খুশি এসব ক্রেতা। তবে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে মানসম্মত অনেক ধরনের পোশাক ফুটপাতে বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি দোকানিদের। এসব পোশাক কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত, তা অনুমান করলেই বোঝা যায়। কিন্তু নিম্ন আয়ের দিনমজুররা স্বাস্থ্যের বিষয়টি না ভেবেই তা ব্যবহার করছেন। এতে করে চর্মরোগ হতে পারে বলেও ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে কারণে এসব পোশাক পরিধানের আগে পানিতে জীবাণুনাশক অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করে তা ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন চিকিৎসকরা।

রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার, আদালত চত্বর, লক্ষ্মীপুর, রেলগেট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের এসব দোকানি ক্রেতার ভিড় জমাতে দাম হাঁকছেন ‘মাত্র দশ, দশ বলে’। এ কারণেই শুধু নি¤œ আয়েরই নয়, ফুটপাতের এসব পোশাকের দোকানে ভিড় করছেন কৌতূহলী বিভিন্ন শ্রেণির পথচারীরাও। তবে কেউ কেউ আবার সেখান থেকে বেছে কিনছেন পছন্দের পোশাক।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীর আদালত চত্বরের ফুটপাত থেকে ক্রয় করা মধ্যবিত্ত এক ব্যক্তি পরিচয় গোপন রেখে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘বাড়ির কাজের লোকদের জন্য কিনলাম, ‘২০ টাকা করে দাম হলেও কোয়ালিটি খুব খারাপ না। এ টাকায় আজকাল কি কোনো পোশাক পাওয়া যায়?’

মমতাজ নামের আরেক ব্যক্তি প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। এদের ডাকহাঁকে দাঁড়ালাম। দুটি ফুল গেঞ্জি পছন্দ হওয়ায় কিনেও ফেললাম।’

ফুটপাতের দোকানদার সাইফুল প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘শীতের এসব পোশাক লট ধরে কেনা। গড় হিসাবে ৩ থেকে ৫ টাকা লাভ রেখেই বিক্রি করছি। তাতেই সারা দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা লাভ হয়। এখানে সাধারণত গরিবরাই বেশি আসে। তবে কখনো কখনো বড়লোকরাও আসে, কিনে নিয়ে যায়, কিন্তু তারা কি করে, তা জানি না। তবে কেনার সময় একা একাই বলে বাড়ির কাজের লোকদের গায়ে ভালোই লাগবে।’

এদিকে, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরীর গরম পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে। ছেলেরা জ্যাকেট ও সোয়েটার কিনলেও নারীরা চাদরের দোকানে বেশি ভিড় জমাচ্ছেন। তবে অভিজাত দোকানের থেকে সাহেব বাজার এলাকার ফুটপাতের দোকানে ভিড় বেশি হচ্ছে। সাধ ও সাধ্যের এসব ফুটপাতের দোকান থেকে পোশাক কিনছে মানুষ। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার শীতের পোশাকের দাম বেশি বলেও অভিযোগ ক্রেতাদের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close