শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

  ০৫ জানুয়ারি, ২০১৯

লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বনভূমি

দখল হচ্ছে টিলা : হারিয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্য

অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চল লাউয়াছড়ার বনভূমির জমি। দিন দিন বনের জমি দখল হয়ে যাওয়ায় সংকটে পড়েছে বন্যপ্রাণীরা। প্রতিকূল পরিবেশে এবং খাদ্যর অভাবে প্রায়ই বন্যপ্রাণী লোকালয়ে আসার ঘটনা ঘটছে। গ্রামবাসীর আক্রমণে অনেক সময় মারাও যাচ্ছে এসব বন্যপ্রাণী। সর্বশেষ বুধবার লাউয়াছড়ার ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যায় একটি মায়া হরিণ। এই দখলের কবলে পড়ে এই বনভূমির টিলাগুলো হচ্ছে বৃক্ষশূন্য। হারিয়ে যাচ্ছে বনের জীব ও প্রাণবৈচিত্র্য।

শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ভানুগাছের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১২৫০ হেক্টর আয়তন নিয়ে ১৯৯৬ সালে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। জাতীয় উদ্যান ঘোষণার পর বনের জমি বেদখল হওয়া ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রভাবশালীরা বনের জমি দখল করে ব্যক্তি মালিকানায় লেবু, আনারসসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করছেন। প্রতি বছর দখলের গ্রাস বেড়েই চলছে। ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংকট ও উদ্যানের পরিসর ক্রমান্বয়ে কমে আসছে।

গত কয়েক দিন উদ্যানের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ডরমিটরি উঁচু পাহাড় সংলগ্ন পূর্ব এলাকায় প্রায় ১৫ একর ভূমি দখল করে গত ৩-৪ বছর ধরে লেবু বাগান গড়ে তোলা হয়েছে।

এর পশ্চিম পাশে হীড বাংলাদেশ অফিস সংলগ্ন জাতীয় উদ্যানের আরো একটি টিলার প্রায় ১৫ একর ভূমি দখলে নিয়ে লেবু বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। লেবু বাগান ঘেঁষা টিলাগুলো গাছগাছালি ও লতাগুল্ম কেটে টিলা নতুন করে বাণিজ্যিকভাবে আবাদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এসব টিলায় দীর্ঘদিন ধরে টিনশেড ঘর করে লোকজন বসানো হয়েছে দখল করা বনের টিলা দেখভালের জন্য।

স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল এসব টিলাভূমি দখলে নিলেও বন বিভাগ বিভাগ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে উদ্যানে বসবাসরত বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে আসছে। জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে এবং পরিবেশের ওপর পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব ।

স্থানীয়রা জানান, যারা এসব ভূমি দখল করছে তারা এলাকার প্রভাবশালী। বনভূমি দখল করে অবৈধভাবে লেবু, আনারস, কলা বাগান গড়ে তুলেছে। এদের কেউ কেউ আগে জাতীয় উদ্যানসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় সহকারী বন সংরক্ষক মো. আনিসুর রহমান জানান, গত ৫ ডিসেম্বর ডরমিটরি এলাকা সংলগ্ন দখলকৃত এলাকা উচ্ছেদ করে আমাদের আওতায় নিয়ে আসছি। তবে হীড বাংলাদেশ সংলগ্ন অফিসের পার্শ্ববর্তী টিলা দখলে নিয়ে টিনশেড ঘরে লোকজনের বসবাস বিষয়ে জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। আর এতে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close