রায়হান তন্ময়, জবি

  ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮

শর্ত অনেক, সুভারভাইজার মেলে না

জবিতে পিএইচডি গবেষণায় ভাটা

জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের (জবি) গবেষণায় আগ্রহী পিএইচডি শিক্ষার্থীরা গবেষণাকর্ম সুভারভাইজ করার জন্য অধ্যাপক পাওয়া যায় না। এ ছাড়া পিএইচডি গবেষণায় আবেদন করার জন্য অতিরিক্ত শর্তারোপের ফলে গবেষণায় ভাটা পড়েছে। তবে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, ‘আসলে বিষয়টি নির্ভর করে যিনি গবেষণা করবেন এবং যিনি সুপারভাইজড করবেন তার ওপর। তাছাড়া আমরা যে মানের পিএইচডি শিক্ষার্থী চাই, সে অনুযায়ী পাচ্ছি না।’

গবেষণাকে বিশ^বিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অর্জন বলা হলেও জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ে গবেষকের সংখ্যা খুবই নগণ্য। পিএইচডি শিক্ষার্থীকে গবেষণার জন্য আবেদন করতে হলে তিন বছরের শিক্ষকতা, শিক্ষাজীবনে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ মার্ক থাকতে হবে। এ ছাড়া বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃক গবেষকের জন্য ডেস্ক, ক্লাস নেওয়ার সুযোগ এবং সম্মানীর ব্যবস্থা না থাকা। শিক্ষকের দেখভাল ও সুপারভাইজের অভাবের ফলে জবিতে গবেষণা করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীরে পিএইচডি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে আসছে। ফলে গবেষণায় নেমে এসেছে ভাটা। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২০ অক্টোবর-২০১৮ বিশ^বিদ্যালয় জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দফতর থেকে প্রকাশিত ‘জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় বার্তা’য় দেখা যায়, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু হয়। ওই শিক্ষাবর্ষে ১০ গবেষক পিএইচডি প্রোগ্রামে যোগ দেন। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ও ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে নয়জন করে গবেষক যোগ দেন। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ১৪ জন। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে পাঁচজন ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ১২ জন গবেষক যোগ দেন। কিন্তু ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে গবেষণা খাতে বরাদ্দ ছিল ৬০ লাখ টাকা ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে বরাদ্দ ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ^বিদ্যালয় কেন গবেষক পাচ্ছে না এবং গবেষণার এ অবস্থা জানতে চাইলে লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. জাকারিয়া বলেন, ‘গবেষকের সংখ্যা কেন বাড়ছে না, তা বলতে পারব না। তবে একজন গবেষককে যেভাবে দেখভাল করা দরকার, তা আমাদের এখানে নেই। তাই এ বছর আমি কোনো শিক্ষার্থীকে গবেষক হিসেবে নেইনি।’

পিএইচডি শিক্ষার্থী ধীরে ধীরে কমে যাওয়ার ব্যাপারে ও গবেষণার ব্যাপারে একজন অধ্যাপক নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘গবেষণা হলো বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য সর্বোচ্চ সফলতা ও একাডেমিক উন্নয়নের জন্য মানদন্ড, কিন্তু আমরা একজন গবেষককে কোনো সুবিধাই দিতে পারছি না। কারণ পিএইচডি গবেষণা হলো এক ধরনের চাকরি, যেখানে গবেষকের নিজস্ব ডেস্ক থাকবে এবং বিশ^বিদ্যালয় থেকে সম্মানী পাবেন, তিনি ক্লাস নেবেন কিন্তু আমরা এ ধরনের কোনো সুবিধা দিতে পারি না। ফলে আমাদের এখানে গবেষকের সংখ্যা কমছে এবং গবেষণায় ভাটা পড়েছে।’

গবেষণায় বরাদ্দ নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সেলিম ভূঁইয়ার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া দেননি। সার্বিক বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আসলে বিষয়টি নির্ভর করে যিনি গবেষণা করবেন এবং যিনি সুপারভাইজড করবেন তার ওপর। তাছাড়া আমরা যে মানের পিএইচডি শিক্ষার্থী চাই, সে অনুযায়ী পাচ্ছি না। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close