নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ নভেম্বর, ২০১৮

ভারত ভ্রমণে সবার শীর্ষে বাংলাদেশ

তুলনামূলক ভালো স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা এবং নৈসর্গিক সব পর্যটন এলাকার টানে নিয়মিতই ভারতে ছুটে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা। ভিসাপ্রাপ্তি আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে যাওয়ায় প্রতিবেশী দেশটিতে গমনে বাংলাদেশিদের এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এখন ভারত ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিশ্বের সব দেশকে ছাপিয়ে এক নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবেশী দুই দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে সামনে আরো কিছু ‘চমক’ আসছে।

ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রতিদিন ছয়-আট হাজার ভিসা ইস্যু করছে হাইকমিশন। যে বাংলাদেশিরা ভারতে যান, তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই যান ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে, ৩০ শতাংশ যান মেডিকেল ভিসা নিয়ে। বাকি ১০ শতাংশ যান অন্যান্য ভিসায়। দার্জিলিং, পর্যটকদের পছন্দের কেন্দ্র ২০১৭ সালে ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক বছরে প্রায় ১৪ লাখ বাংলাদেশি ভ্রমণ করেছে ভারত। যেটা ছিল ভারত ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের প্রায় ১৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ছাপিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র (প্রায় ১২ লাখ) এবং যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো দেশগুলোকেও। ২০১২ সালে ভারতে ভ্রমণকারী বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীতে ঈদসহ বিশেষ ক্ষেত্রে অধিকসংখ্যক ভিসা দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশন। নরেন্দ্র মোদি সরকারের সদিচ্ছা আর বর্তমান হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার আন্তরিকতায় ভিসা প্রক্রিয়া হয়েছে অনেক সহজ ও কম সময়সাপেক্ষ। ভিসা প্রক্রিয়া সহজ থেকে সহজতর হয়েছে বিধায়ই দেশটিতে বাংলাদেশিদের গমনের হারও বেড়ে চলেছে।

ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের হিসাবমতে, ২০১৭ সালে যেখানে ভারত ভ্রমণকারী বিদেশিদের মধ্যে ১৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ ছিল বাংলাদেশি, সেখানে ২০১৮ সালের মার্চে এসে এ হার দেখা যায় ১৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর চলতি বছরের জুনে এ হার দেখা গেছে ২৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। রাজস্থানের একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট কেবল বাংলাদেশিই নয়, সার্বিকভাবেও ভারত ভ্রমণের হার বাড়ছেই। দেশটির ইমিগ্রেশন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জানুয়ারি-জুনে ভারতে ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪৭ জন বিদেশি ভ্রমণ করেছেন, আর ২০১৮ সালের জানুয়ারি-জুনে দেশটিতে গেছে ৫১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৪৩ জন বিদেশি। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিদেশিদের ভ্রমণ বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৯ শতাংশ।

দার্জিলিং, কাশ্মীর, আজমীর, আগ্রা, গোয়া, কন্যাকুমারীর মতো নৈসর্গিক পর্যটন এলাকার টান; চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, ভেলোর, মুম্বাই ও দিল্লির চিকিৎসাসেবার প্রতি আস্থা এবং সুলভ কেনাকাটার জন্য বাংলাদেশিদের আগ্রহের কেন্দ্রেই থাকে ভারত।

বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত কয়েক বছরে ঢাকা-কলকাতা, খুলনা-কলকাতা নন স্টপ ট্রেন চলাচল, হরিদাসপুর ও গেদে রুটে রুট ব্যারিয়ার তুলে নেওয়া, ই-টোকেন ছাড়া ভিসা আবেদন, সিনিয়র সিটিজেনদের পাঁচ বছরের ভিসা, ট্যুরিস্ট ভিসায় সাধারণদের এক বছর ভিসা দেওয়া প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে ভারত।

এ ছাড়া ঢাকায় চাপ কমাতে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জেলায় ভিসা সেন্টার খোলার ঘোষণা আগেই দিয়েছে হাইকমিশন। বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন। এটিসহ আরো সুখবর শিগগিরই মিলবে ভারত ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো আগেই জানিয়েছে, সিকিম, লাদাখ, অরুণাচল, মণিপুর, মিজোরামের মতো দারুণ আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও বাংলাদেশিদের প্রবেশ সহজ হতে চলেছে। কবে নাগাদ তা হবে, সেটা সংবাদ মাধ্যমগুলো স্পষ্ট না করলেও বলা হচ্ছে, ওই পর্যটনগুলোতে প্রবেশও সহজ হলে ভারতে বাংলাদেশি পর্যটক বেড়ে যাবে আরো কয়েকগুণ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close