বান্দরবান প্রতিনিধি

  ১৪ নভেম্বর, ২০১৮

বান্দরবানে নিরাপত্তা বাহিনী-সন্ত্রাসী ‘বন্দুকযুদ্ধ’ কিশোর নিহত

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার ঘেরাওভিতরপাড়া এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়েছে। এতে এক মারমা কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছে। গত সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোয়াংছড়ি উপজেলার বিইউটি ইটভাটায় স্থানীয় মগ পার্টি চাঁদার দাবিতে দীর্ঘদিন হুমকি দিয়ে আসছিল। বিষয়টি ইটভাটার মালিক পক্ষ স্থানীয় ক্যাম্পে জানায়। গত সোমবার রাতে তাদের চাঁদা নিতে আসার খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি টহল দল ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেয়।

সন্ত্রাসীদের যেখানে থাকার কথা ছিল বলে গোয়েন্দা তথ্যে জানা গিয়েছিল, তারা সেখানে না গিয়ে অন্য স্থানে অবস্থান করছিল। নিরাপত্তা বাহিনী সেই স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করলে পাশের উঁচু পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীরা নিরাপত্তা বাহিনীর টহল দলের ওপর গুলি করতে শুরু করে। এ সময় এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ হওয়ার চিৎকার শোনা গেলেও নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষে গুলির মধ্যে সেখানে যাওয়া সম্ভব ছিল না। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান নিয়ে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে গুলি ছুড়তে শুরু করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে অন্তত ২০ মিনিট গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে সন্ত্রাসীদের পক্ষে ২০ রাউন্ড এবং নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষে ৩৫ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে গুলিবিদ্ধ এক কিশোরকে দেখতে পায়।

তার নামক্যাসিঅং মারমা (১৪)। পিতার নাম পাইনু মং মারমা, গ্রাম ভিতরপাড়া। নিরাপত্তা বাহিনী গুলিবিদ্ধ কিশোরকে উদ্ধার করে রোয়াংছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বান্দরবান সদর হাসাপাতালে পাঠিয়েছে।

সেখানে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের উদ্দেশে পাঠানো হলে পথেই তার মৃত্যু ঘটে। মূলত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু ঘটেছে। এই ঘটনার পর সামাজিক গণমাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনীকে জড়িয়ে ব্যাপক অপপ্রচার শুরু করা হয়। এ বিষয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, নিহত কিশোরের শরীরে যে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে তা বাংলাদেশের কোনো নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে না। তবে ময়না তদন্তের পর বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে। ঘেরাওভিতরপাড়া ইউপি মেম্বর মেচিঅং মারমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, লাশের সঙ্গে তিনি বান্দরবান সদরে অবস্থান করছেন। তাই ঘটনার বিস্তারিত তিনি জানেন না।

রোয়াংছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সন্ত্রাসী ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবিনিময়ের পর এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ বান্দরবান সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

কিশোরটি কীভাবে মারা গেল জানতে চাইলে ওসি জানান, সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা গেছে। সন্ত্রাসী কারা ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে সন্ত্রাসী কারা ছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়ভাবে শুনেছি মগ লিবারেশন পার্টি হতে পারে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close