বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

  ১৩ নভেম্বর, ২০১৮

বেনাপোল বন্দরে প্রতিবন্ধীদের কাছ থেকেও ভ্রমণকর নেওয়া হচ্ছে

ভারতগামী বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শিশু, ক্যানসার রোগী ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের মওকুফকৃত ভ্রমণকর নতুন করে আদায়ের নির্দেশনা দিয়েছেন বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) প্রদোষ কান্তি দাস। এতে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।

গত রোববার সকালে বেনাপোল বন্দরে যাত্রীপ্রতি ৪১ টাকা থেকে ৪৫ টাকা হারে কর আদায় করতে দেখা যায়। এর আগে পাঁচ বছরের নিচে শিশু, ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, প্রতিবন্ধী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভারত ভ্রমণে বন্দরের ভ্রমণকর মওকুফ ছিল। জানা যায়, প্রতিদিন বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচ থেকে আট হাজার যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করছেন। যার অধিকাংশ যাত্রী চিকিৎসার জন্য ভারত যাচ্ছেন। ভারতীয় যাত্রীরা যারা বাংলাদেশে

আসেন, ভারত সরকার তাদের কাছ থেকে কোনো ভ্রমণকর আদায় করে না। কিন্তু বাংলাদেশিরা ভারতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ সরকার যাত্রীপ্রতি ৫০০ টাকা ও বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ৪০ দশমিক ৭০ টাকা হারে ভ্রমণকর আদায় করে থাকে। তবে পাঁচ বছরের নিচে শিশু, ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, প্রতিবন্ধী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ সরকার ভ্রমণ ট্যাক্স মওকুফ করলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন করে ভ্রমণকর সংযোগ করে।

বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে কর্মরত সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম বলেন, সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণকর বাবদ মোট ৫৪১ টাকা আদায় করা হচ্ছে। তবে প্রথম থেকেই শিশু, ক্যানসার রোগী, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী পাসপোর্ট যাত্রীদের ক্ষেত্রে এই ভ্রমণকর মওকুফ ছিল। চলতি সপ্তাহে বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব যাত্রীপ্রতি ৪০ দশমিক ৭০ টাকা হারে ভ্রমণকর আদায়ের নির্দেশনা দেয় তাদের।

বেনাপোল চেকপোস্টে অবস্থিত রাজা-বাদশাহ মানিচেঞ্জারের স্বত্বাধিকারী আবুল বাশার জানান, প্রায় তিন বছর হচ্ছে কেবল টয়লেট সুবিধা ছাড়া প্রতিশ্রুতিকৃত কোনো সেবা চালু করতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। অথচ প্রতি বছর এ ট্যাক্স বেড়েই চলছে। এর মধ্যে আবার অসহায় মানুষদের কাছ থেকে ভ্রমণকর আদায় শোভনীয় দেখায় না। ভারতে চিকিৎসার উদ্দেশে বেনাপোল বন্দরে আসা ক্যানসার ও প্রতিবন্ধী যাত্রীরা বলেন, এর আগে তারা যখন ভারতে গেছেন, তাদের কোনো ভ্রমণকর দিতে হয়নি। কিন্তু এখন বন্দর ভ্রমণকর নিচ্ছে। বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষকে আবার বিবেচনা করার আহ্বান জানান এই পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।

এদিকে বন্দরের ভ্রমণকর যাত্রীপ্রতি ৪০ দশমিক ৭০ টাকা এবং বাংলাদেশ সরকারের ভ্রমণকর ৫০০ টাকা নির্ধারণ হলেও কর্তৃপক্ষ খুচরা পয়সা নেই অজুহাত দেখিয়ে ৪০ দশমিক ৭০ টাকার স্থলে ৪২ টাকা থেকে ৪৫ টাকা এবং ৫০০ টাকার স্থলে ৫১০ টাকা আদায় করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট ট্যাক্স ছাড়াও বাড়তি আদায় হচ্ছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। এ অর্থ সোনালী ব্যাংক ও বন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তা ভাগবাটোয়ারা করে নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) প্রদোষ কান্তি দাস জানান, বাংলাদেশ স্থলবন্দর চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে এই ভ্রমণকর চালু করা হয়েছে। এখন থেকে সব ধরনের যাত্রীদের ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে ৪০ দশমিক ৭০ টাকা হারে বন্দরের এই কর পরিশোধ করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close