আল-আমিন মিন্টু, রূপগঞ্জ

  ১২ নভেম্বর, ২০১৮

নারায়ণগঞ্জে ফুটওভার ব্রিজ পুলিশের সামনেই অনিয়ম!

একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না হতে পারে। রাস্তাঘাটে একটু অনিয়ম ভয়াবহ পরিণতি ঢেকে আনতে পারে মানুষের জীবনে। একটু সময় বাঁচাতে নয়ত একটু পরিশ্রম থেকে পরিত্রাণ পেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার হতে দেখা যায় অনেককে। এ কাজে প্রতিদিন সব বয়সের মানুষ লিপ্ত। কেউ ছুটেন খালি হাতে। কেউ কেউ ছুটেন ছেলেমেয়ের হাত টেনে ধরে। কেউবা ছুটেন মাথায় বোঝা নিয়ে। কেউ দৌড়ান, কেউ হাঁটেন। এভাবে প্রতিদিন সকাল থেকে রাতে ফুটওভার ব্রিজ থাকার পরও তা ব্যবহার না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক ও মহাসড়ক পারাপার হতে দেখা যায়। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সিমরাইল ও চিটাগাং রোড এলাকায়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সিমরাইল ও চিটাগাং রোড এলাকায় প্রায় ১৫০ ফুট দূরত্বের মধ্যে পথচারীদের পারাপারের জন্য সুবিশাল দুইটি ফুটওভার ব্রিজ আছে। এ দুটি ব্রিজ অনেক

পথচারীরা ব্যবহার করলেও অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কের ওপর দিয়ে রোড ডিভাইডার লাফিয়ে লাফিয়ে পারাপার হয়। বিভিন্ন বয়সের পথচারীরা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে পুলিশের সামনে দিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছেন। চিটাগাং রোড ট্রাফিক পুলিশের বক্সের সামনে দিয়ে ও অদূরে এমন ঘটনা প্রতিদিন ঘটলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।

সরেজমিন সচিত্র প্রতিবেদন ও ছবি তোলতে গিয়ে অনেক পথচারীদের ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করার দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি হয়। দেখা গেছে, সড়কের উভয় পাশ দিয়ে দ্রুতগতির গাড়ি চলাচল করা অবস্থায়ও অনেকেই দৌড়ে ও হেঁটে হেঁটে সড়ক পারাপার হচ্ছেন ঝুঁকি নিয়ে। অনেকেই চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে রোড ডিভাইডার পার হচ্ছেন তাও ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে দিয়ে।

পথচারী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তার বাড়ি হোমনা। তিনি ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে সড়কের ওপর দিয়ে পার হচ্ছেন। এত বড় ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হচ্ছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ফুটওভার ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচল করতে অনেক কষ্ট হয়। ব্রিজের ওপর ভাসমান দোকান অনেক। ক’দিন আগে ব্রিজ দিয়ে পারাপার হওয়ার সময় আমার পকেট থেকে কিছু টাকা নিয়ে গেছে কখন আমি টের পাইনি। ভাসমান দোকানগুলোর কারণে ধাক্কাধাক্কি করে পার হতে হয়।

শফিক, মিঠু, আজিজ। তাদের সড়ক দিয়ে পারাপার হতে দেখা গেছে। তারা সড়কের ডিভাইডার পার হওয়ার সময় একটি অ্যাম্বুলেন্সের সামনে দিয়ে লাফ দেয়। এমন দৃশ্য দেখে তাদের কাছে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, আমাদের সমস্য আমরা বুঝেই চলি। কথা বলার সময় নেই। তাদের মধ্যে একজন রেগে বলেন, ‘আমনে তো আইনের লোক না। তখন তারা ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে দিয়ে সড়ক পার হচ্ছিলেন।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফুটওভার ব্রিজের ওপর ভাসমান দোকানি বলেন, ‘ব্রিজের ওপর দোকান যতডি আছে, সবডিরতে টাকা নেয়। কে নেয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমনে বুঝেন না কার লোকে টাকা দিতে পারে। ৩০ থেকে ৫০ টাকা দিতে হয়। কোন সময় নেয়? ঠিক নাই। সকালে, দুপুরে, বিকালে হেগ সময় মতো আসে। ভাই ভুলেও আমার নাম লেইখেন না।’

চিটাগাং রোড ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) তসলিম উদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পথচারীরা যেন ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করে সেজন্য সচেতেনতা বৃদ্ধি করব। তবে ফুটওভার ব্রিজের ওপর যেসব দোকান আছে সে বিষয়ে দেখবেন থানা পুলিশ।

ফুটওভার ব্রিজের ওপর টুকরিতে যেসব ভাসমান দোকান আছে এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, কোনো দোকান থাকবে না। কিছুক্ষণের মধ্যে ভেঙে দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close