নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ অক্টোবর, ২০১৮

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন স্কেল চায় ইউজিসি

সর্বশেষ জাতীয় পে-স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তবে কয়েক বছর ধরেই শিক্ষকরা দাবি জানিয়ে আসছেন স্বতন্ত্র পে-স্কেলের। এবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন স্কেলের সুপারিশ জানিয়েছে। ইউজিসির ‘৪৪তম বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৭’-এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে এ সুপারিশ জানিয়েছে ইউজিসি। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অধ্যাপক আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে এ প্রতিবেদন পেশ করে।

জানা যায়, ২০১৫ সালের মে মাসে তৎকালীন প্রস্তাবিত অষ্টম জাতীয় স্কেলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পদমর্যাদা অবনমন করার অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাস্তায় নামেন। তাদের দাবি ছিল শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ঘোষণা ও প্রস্তাবিত অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো পুনর্র্নির্ধারণ করতে হবে। এ নিয়ে টানা প্রায় পাঁচ মাস আন্দোলন করেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষকদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন শিক্ষার্থীরাও। ওই সময় পরিস্থিতি ‘জটিল অবস্থায়’ চলে গেছে বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। একপর্যায়ে এই বেতন কাঠামো পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করে সরকার। পরে ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতীয় বেতন স্কেলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বিলোপের পর গেজেট প্রকাশ করে সরকার। এরপর এই গেজেটের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মানমর্যাদা ও স্বার্থরক্ষা হয়েছে উল্লেখ করে আন্দোলন থেকে সরে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।

সূত্র জানিয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑউচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেল ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া, শিক্ষক ও গবেষকদের জন্য আকর্ষণীয় আর্থিক সুবিধাসহ অন্যান্য চাহিদা পূরণের সুযোগ থাকতে হবে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়Ñনতুন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর পদগুলোয় স্থায়ীভাবে শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিতকরণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। অভিজ্ঞ শিক্ষকরা যেন অপেক্ষাকৃত নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদানে আগ্রহী হন, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’

ইউজিসির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর। আর তাদের যত বেশি প্রণোদনা দেওয়া হবে, গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে, মেধাবীরা তত বেশি শিক্ষকতা পেশায় আসবেন। ফলে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব হবে।

ইউজিসি কর্মকর্তাদের মতো একই মন্তব্য করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, ‘জাতি গঠনে মেধা ও মনন দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাতে উচ্চশিক্ষা। ফলে এ স্তরকে যত বেশি সমাদর করা সম্ভব হবে, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন তত বেশি সম্ভব হবে। আর এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সব সময় বলেন। কয়েকদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে তার আগ্রহের কথা স্পষ্ট জানিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন যে এই সুপারিশটি করেছে, সে বিষয়ে আমরা অবগত। দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছি। আর তারই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপতিকে এই সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close