আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশের সব বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্য তালিকা নির্ধারণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটিকে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. বশির আহমেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিবকে। এ ছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহের পরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিক সমিতির মহাসচিব।

এ ব্যাপারে আইনজীবী ড. বশির আহমেদ বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুসারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তা আজ আদালতকে জানিয়েছেন। ওই কমিটি ইতোমধ্যে দেশের সব বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্য তালিকা নির্ধারণ করতে নোটিস দিয়েছে। তবে মাত্র দুটি হাসপাতাল (বিআরবি এবং সেন্ট্রাল হাসপাতাল) এই তালিকা করলেও বাকিরা তালিকা তৈরির কাজ করছে। এমনকি এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তি প্রদান, প্রতিটি জেলায় আইসিইউ, সিসিইউ গড়ে তোলার বিষয়ে কাজ করছে। তাই আদালত শুনানি নিয়ে দুই মাসের মধ্যে এই কমিটিকে ‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’ অনুসারে চিকিৎসার ফি এবং এ-সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৯ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন।’

প্রসঙ্গত, এর আগে হিউম্যান রাইটস ল’ ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম রিটটি দায়ের করেন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৪ জুলাই দেশের সব বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্য তালিকা আইন অনুসারে টানানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল। পাশাপাশি ‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’ অনুসারে নীতিমালা তৈরি এবং বাস্তবায়নের জন্য ৬০ দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তারা ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে গতকাল সোমবার হাইকোর্টে প্রতিবেদন আকারে বিষয়টি অবহিত করেন।

"