কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ২১ অক্টোবর, ২০১৮

কক্সবাজারে ৪৩ জলদস্যুর আত্মসমর্পণ : ৯৪ অস্ত্র জমা

গতকাল ৬ বাহিনীর ৪৩ জলদস্যু ও সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করেছে

সব কল্পনা-জল্পনার আর সন্দেহের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে কক্সবাজারের মহেশখালী-কুতুবদিয়া অঞ্চলের ৬ বাহিনীর ৪৩ জন জলদস্যু ও সন্ত্রাসী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে ৯৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও সাত হাজার ৬৩৭ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে তারা। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বড় মহেশখালী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে আত্মসমর্পণ করেন এসব সন্ত্রাসী ও জলদস্যুরা।

র‌্যাব জানায়, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দীর্ঘদিন ধরে অপরাধীদের উৎসাহ দিয়ে আসছিল র‌্যাব-পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার ৬ বাহিনীর ৪৩ জলদস্যু ও সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করেছে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আরো ছিলেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এবং পুলিশ প্রধান ড. জাবেদ পাটোয়ারী, র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, র‌্যাব-৭ এর কমান্ডার, কোস্টগার্ডের কমান্ডারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মহেশখালী-কুতুবদিয়াকে জলদস্যু ও সন্ত্রাসীমুক্ত করা হবে। সন্ত্রাসীদের যদি কেউ সহযোগিতা করে তাদেরও মূলোৎপাটন করা হবে। বর্তমানে কক্সবাজারে উন্নয়নের মহাজোয়ার চলছে, তাই এখানে কোনো জলদস্যু-সন্ত্রাসী থাকতে পারবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি জেনেছি এখানে বাহিনী-বাহিনী যুদ্ধ চলে। একটা বাহিনীকে ঘায়েল করতে আরেকটি বাহিনীর জন্ম দিচ্ছে। আমি কঠোরভাবে বলতে চাই, এখানে কোনো বাহিনী থাকতে পারবে না। এর আগে মন্ত্রী আত্মসমর্পণকারীদের হাতে সহায়তার চেক তুলে দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘কক্সবাজারে ২৩ লাখ মানুষের বসতি। এদের মধ্যে কিছু সংখ্যক মাদক ব্যবসায়, কিছু সংখ্যক ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। এদের আমাদের দরকার নেই। এই কিছু সংখ্যক মানুষকে বিনাশ করে ফেললে দেশের কোনো ক্ষতি হবে না’।

অনুষ্ঠানে আনজু বাহিনীর ১০ জন ২৪টি অস্ত্র জমা দিয়ে, রমিজ বাহিনীর দুইজন আটটি অস্ত্র জমা দিয়ে, নুরুল আলম প্রকাশ কালাবদা বাহিনীর ছয়জন ২৩টি অস্ত্র জমা দিয়ে, জালাল বাহিনীর ১৫ জন ২৯টি অস্ত্র জমা দিয়ে, আইয়ুব বাহিনীর ৯ জন ৯টি অস্ত্র জমা দিয়ে এবং আলাউদ্দিন বাহিনীর একজন একটি অস্ত্র দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। জমাকৃত অস্ত্রের মধ্যে, এসএমজি (বেলজিয়াম) একটি, রিভলবার একটি, দেশি পিস্তল দুইটি, দেশি-বিদেশি একনলা বন্দুক ৫২টি, দোনলা দুইটি, ওয়ান শুটারগান ১৯টি, থ্রি কোয়ার্টার গান ১৫টি এবং ২২ বোর রাইফেল রয়েছে দুইটি। এ ছাড়া জমা পড়েছে সাত হাজার ৬৩৭ রাউন্ড গুলি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close