বিএনপির বিরুদ্ধে ‘গায়েবি মামলা’ দেওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেছেন, ‘এগুলোর বিষয়ে আমাদের কাছে সঠিকভাবে কোনো প্রমাণ আসেনি। তবে তারা প্রমাণ করে বললে আমরা দেখব।’ গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমির হোসেন আমু এ কথা বলেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে নির্বাচন সামনে রেখে তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে, ব্যাপক আটক হচ্ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা সঠিক নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ তারা দেখাতে পারবে না, নতুন করে কারো বিরুদ্ধে কোনো গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে না। বিএনপি নির্বাচনী প্রচার কাজের সুবিধার্থে এই ধরনের অপপ্রচার চালাতেই পারে।’

ইতোমধ্যে মৃত ব্যক্তি, বিদেশে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে আমু বলেন, ‘এগুলোর বিষয়ে আমাদের কাছে সঠিকভাবে কোনো প্রমাণ আসেনি। তারা বক্তব্যে বলছে। তারা প্রমাণসহ বললে আমরা দেখব।’

শিল্পমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে তো আইনশৃঙ্খলা না, আইনশৃঙ্খলাটা জেনারেল। নির্বাচনের পরিবেশ সেটা আলাদা, নির্বাচনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলার কোনো সম্পর্ক আছে বলে আমরা মনে করি না। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো আসবে, তাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে বলে আমরা মনে করি না।’

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, এ ব্যাপারে আপনারা কী পদক্ষেপ নেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয়, ওই আশঙ্কার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। এর কারণ যাদের নিয়ে আশঙ্কা তারা কিন্তু সেই ধরনের কথা বলছেন না। তারা নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে কথা বলেছেন, সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রশ্ন আছে বলে আমি মনে করি না।’

জাতীয় সংসদে নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য চিরুনি অভিযানের কথা বলা হয়েছিল- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘অভিযান চলছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এটা চিরদিনের প্রথা। যেকোনো সরকারই যখনই ক্ষমতায় থাকে অবৈধ অস্ত্র শুধু নির্বাচন সামনে রেখে নয়, এখানে যেহেতু জঙ্গিবাদের উৎপাত ছিল, বিভিন্নভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করা হচ্ছিল, সুতরাং, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কাজ অব্যাহত আছে, অব্যাহত থাকবে।’

বৈঠকে গত কয়েক মাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার চিত্র অত্যন্ত সন্তোষজনক। দেশে যে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল, সেটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। গোটা পরিস্থিতি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক স্থিতিশীল, বিরোধী দল রাজনীতি করছে, মিছিল করছে, তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদের মধ্যে যাতে অনুপ্রবেশকারী ঢুকে গোলমাল সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লক্ষ করছে। সব দিক থেকেই দেশের অবস্থা সামনের দিকে, নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।’

আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি আমু বলেন, ‘আমাদের রাস্তায় যানবাহনের দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং না করা এবং মাঝে মাঝে চেক পোস্ট দিয়ে চেক করা হয়। যারা গাড়ি চালাচ্ছেন তারা হেলপার নাকি প্রকৃত লাইসেন্সধারী ড্রাইভার- এগুলো চেক করা হচ্ছে, যাতে দুর্ঘটনা না হয়।’

"