পাবনা ও গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি

  ০২ অক্টোবর, ২০১৮

পাবনায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চরমপন্থি নিহত

পাবনায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চরমপন্থি নেতা আবুল হোসেন ওরফে আবু নকশাল (৫৫) নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার ভোরে সদর উপজেলার ধোপাঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল সদর উপজেলার ভাঁড়ার ইউনিয়নের পূর্ব রাঘবপুর গ্রামের মৃত গোলাম উদ্দিনের ছেলে। আর একই সময়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক মাদক কারবারি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার নাম রবিউল ইসলাম ওরফে টিটু।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, গত রোববার আবুল হোসেন ওরফে আবুলকে পূর্ব রাঘবপুর থেকে গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, তার সহযোগীদের কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ মজুদ রয়েছে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সোমবার রাত ৩টার দিকে তাকে নিয়ে অভিযানে বের হয় পুলিশ। পুলিশের আভিযানিক দল সদর উপজেলার ধোপাঘাটা বড় ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে পৌঁছামাত্র আবুলকে ছিনিয়ে নিতে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এর মাঝে আবুল ওরফে আবু কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ও দুষ্কৃতিকারীদের মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট গুলিবিনিময়ের এক পর্যায়ে দুষ্কৃতিকারীরা পিছু হটে যায়। পরে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আবুলকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ৪টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস আরো জানান, নিহত আবুল নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এম এল লাল পতাকার পাবনা জেলা কমান্ডার। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরকসহ ৯টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তারা হলেন এএসআই শহিদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, কনস্টেবল সাইদুর রহমান ও আবদুল জলিল। তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ সময় ১টি রিভালবার, ৪ রাউন্ড ২২ বোরের গুলি, ৬ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ৪ রাউন্ড কার্তুজের খোসা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

গোদাগাড়ীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত টিটু মাটিকাটা ইউনিয়নের প্রেমতলী কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম কয়েশ উদ্দিন। বছর দুয়েক আগে টিটু এই গ্রামে এসে বাড়ি করে বসবাস শুরু করেন। এর আগে গোদাাগড়ীর ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চামারবাড়ি গ্রামে তার বাড়ি ছিল।

জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নূরে আলম জানান, রাতে শিয়ালা গ্রামে মাদক কেনাবেচা চলছিল। খবর পেয়ে গোদাগাড়ী থানা পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় সেখানে অবস্থানরত তিন-চারজন ব্যক্তিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু করে।

আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। কয়েক মিনিট গুলি বিনিময়ের পর সবাই পালিয়ে গেলেও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকেন টিটু। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টিটুর বাম পায়ের হাঁটুতে গুলি লেগেছে। ঘটনার সময় দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন।

ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, একটি এমপি কার্টিজ ও ৩০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় তিনটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় টিটু ছাড়াও অজ্ঞাত তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে। টিটুর বিরুদ্ধে আগের আরো চারটি মাদকের মামলা আছে বলেও জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close