নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ভাসানচরে রোহিঙ্গা আশ্রয়ণের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য নোয়াখালীর ভাসানচরে অবকাঠামো নির্মাণসহ সরকার যে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, আগামী ৪ অক্টোবর তা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং শরণার্থী সেলের প্রধান মোহাম্মদ হাবিবুল কবীর চৌধুরী গতকাল সোমবার এই তথ্য জানিয়েছেন।

সচিবালয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী ৪ অক্টোবর ভাসানচরে যাবেন সেখানে যে স্ট্রাকচারগুলো হয়েছে সেগুলোসহ অন্য সবকিছু উদ্বোধন করবেন।

২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ‘আশ্রয়ণ-৩ (নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানাধীন চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ভাসানচরে ১ লাখ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আবাসন এবং দ্বীপের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ)’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ২ হাজার ৩১২ কেটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। পুরোপুরি সরকারি অর্থায়নের এ প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারিত আছে।

ভাসানচরের পুরো প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য থাকার ঘর করা হয়েছে, সাইক্লোন শেল্টার করা হয়েছে, মালামাল রাখার গোডাউন রয়েছে, বাঁধ নির্মাণ এবং সমুদ্র থেকে মালামাল নামাতে জেটি করা হয়েছে। আমরা তাদের ভাসানচরে নেওয়ার আগে উদ্বুদ্ধ করব, রোহিঙ্গা নেতাদের নিয়ে গিয়ে দেখাব। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোও সেখানে যাক।

হাবিবুল কবীর বলেন, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা শনিবার ভাসানচর পরিদর্শন করেছে, তারা হ্যাপি। তবে তারা কিছু ফাইন্ডিংস দিয়েছে, আমরা সেগুলো অ্যাড্রেস করব।

ভাসানচরে বানানো চারতলা সাইক্লোন সেল্টারগুলো বহুমুখী কাজে ব্যবহার করা হবে জানিয়ে এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, সেখানে মেডিকেল সেন্টার হবে, শিশুদের পড়ানো হবে; মাছ চাষ ও গরু, মহিষ, ভেড়া পালনের সুযোগ থাকবে। রোহিঙ্গাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কবে থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম আজাদ বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর সরকার যেভাবে চাইবে সেভাবেই ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের রাখা শুরু হবে।

তিনি বলেন, অবকাঠামোগত অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু এর বাইরেও অনেক বিষয় আছে তাদের কে দেখভাল করবে, দায়িত্ব কে নেবে, ব্যবস্থাপনার প্রশাসনিক বিষয় আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সেখানে যাবে কিনা? হয়ত একটু সময় লাগতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার পর সরকার যেভাবে চাইবে আমরা সেভাবেই রেসপন্স করব। আমরা সবাইকে নিয়ে এটা সম্পূর্ণ করতে চাই।

নোয়াখালীর চর ঈশ্বর ইউনিয়নে ভাসানচরের অবস্থান। নোয়াখালী থেকে এর দূরত্ব ২১ নটিক্যাল মাইল। ভাসানচরের আয়তন জোয়ারের সময় ১০ হাজার একর এবং ভাটার সময় ১৫ হাজার একর। জনমানবহীন চরটি মূলত গরু-মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ২০১৩ সালে এ চরকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকা ঘোষণা করা হয়। ইঞ্জিনচালিত নৌযান ছাড়া সেখানে যাতায়াতের সুযোগ নেই। হাতিয়া থেকে যেতেও তিন থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close