নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সাইবার ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে ৭ বিভাগীয় শহরে

এবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রয্রক্তি আইনে অপরাধের বিচার দ্রুত নিশ্চিতে সাত বিভাগীয় শহরে সাতটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল করছে সরকার। অনলাইনে মিথ্যা ও গুজব রটানোর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে এবং ৫৭ ধারায় আগের করা প্রায় ৭০০ মামলার দ্রুত বিচার শেষ করতে এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, অনুমতি ছাড়াই ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের বিচার হবে এই ট্রাইব্যুনালে। এই ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে।

টেলিফোন, অনলাইন এবং ই-মেইল হ্যাকিং-সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের জন্য সরকার ২০১৩ সালে একটি সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। বর্তমানে ঢাকার আদালতে স্থাপিত সাইবার ট্রাইব্যুনালে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে (আইসিটি অ্যাক্ট) করা ১ হাজার ৫০টি মামলার বিচারকাজ চলছে। এ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য আসা ৯০ ভাগই আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার মামলা।

এদিকে, আপত্তি ও মতামত উপেক্ষা করে গত বুধবার জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়েছে। ওই আইনে করা মামলাগুলো নিষ্পত্তি হবে সাইবার ট্রাইব্যুনালে। প্রশাসনিক সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ের

আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এরপরই ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হবে।

আইন মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাতটি বিভাগীয় শহরে নতুন সাইবার ট্রাইব্যুনাল স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া গেছে। সব প্রশাসনিক কার্যক্রম শেষে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এরই মধ্যে জনবল নিয়োগের ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সাতটি সাইবার ট্রাইব্যুনালের জন্য এরই মধ্যে ৪২টি পদ সৃজন করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার সাতজন বিচারক থাকবেন। এ ছাড়া সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর সাতজন, বেঞ্চ সহকারী সাতজন, আউটসোর্সিং গাড়িচালক সাতজন, আউটসোর্সিং জারিকারক সাতজন ও এমএলএসএসের সাতটি আউটসোর্সিং পদ রয়েছে। পাশাপাশি সাতটি ট্রাইব্যুনালে গাড়ি, কম্পিউটার ও ফটোকপিয়ার মেশিন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এসব ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠায় প্রাথমিক পর্যায়ে জনবল, অবকাঠামোসহ আনুষঙ্গিক খাতে ব্যয়ও নির্ধারণ করা হয়েছে। সাতটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন হলে এক হাজার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির পথ উন্মুক্ত হবে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে সাইবার ক্রাইম বেড়ে যাওয়ায় মামলার সংখ্যাও বাড়ছে। ফেসবুকে নারীদের নিয়ে আপত্তিকর ছবি ও অশ্লীল ভিডিও পোস্টের অভিযোগে ৫৭ ধারায় সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য প্রচার, অনলাইনে মানহানিকর সংবাদ প্রচারের অভিযোগেও ৫৭ ধারায় মামলা হচ্ছে। পাশাপাশি হ্যাকিং ও অনলাইনে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে আইসিটি অ্যাক্টের ৫৫ ও ৫৬ ধারায় মামলা হয়ে থাকে।

জানা গেছে, সম্প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুক্ত হয়েছে ঔপনিবেশিক আমলের সমালোচিত আইন ‘অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট’। অর্থাৎ ডিজিটালের মাধ্যমে কেউ অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট ভঙ্গ করলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিচার করা হবে। এ অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা ১৪ বছর। তা ছাড়া আইনের ১৪টি ধারায় অপরাধ হবে অজামিনযোগ্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close