একজন অচেনা নারীর সঙ্গে করমর্দন করতে গিয়ে আঙুলের দামি হিরের আংটিটিই খোয়ালেন কলকাতার মোহনচাঁদ নামের এক চিকিৎসক। কলকাতা শহরের একজন প্রথম সারির ইউরোলোজিস্ট তিনি। কয়েক দশক ধরে কলকাতায় কয়েক

হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছেন। তাই রাস্তাঘাটে হামেশাই দেখা হয়ে যায় তাদের অনেকের সঙ্গে। তিনি নিজে চিনতে না পারলেও ডাক্তার বাবুকে মনে রেখেছেন রোগী বা রোগীর পরিবার। তাই কথা বলতেই হয়। কিন্তু তার পরিণতি যে এতটা মারাত্মক হবে- তা স্বপ্নেও ভাবেননি ওই চিকিৎসক।

সেদিন রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সেলুনে চুল কাটাতে। তার বাড়ি থেকে সেলুনের দূরত্ব কয়েক মিনিটের পথ। ৭৩ বছর বয়সী চিকিৎসক তাই পায়ে হেঁটেই যাচ্ছিলেন। তখন সন্ধ্যা। সেখানে পৌঁছতেই এক মধ্যবয়সী নারী তার দিকে এগিয়ে আসেন। ওই নারী তাকে নাম ধরে সম্বোধন করেন। সেই নারীর সঙ্গে কথা বলতে বলতেই তিনি আরো খানিকটা পথ হাঁটেন। তার পর সেলুনের পথে যাওয়ার আগে ওই নারীর সঙ্গে করমর্দনও করেন।

সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু বাড়ি ফিরেই আক্কেলগুড়ুম। ডান হাতের অনামিকায় যে বড়সড় হিরের আংটি ছিল, তা গায়েব। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও হদিশ মেলে না তার আংটির। শেষে তার সন্দেহ হয় ওই নারীকেই। পরের দিনই রোববার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই নারীকে চিকিৎসক চিনতে পারেননি। তবে ওই নারী নিজেকে একজন রোগী হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। এক তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই নারী চিকিৎসককে নিজের বাড়ি নিয়ে গিয়ে চা খাওয়ানোর জন্য জোরাজুরিও করেছিলেন।’ পুলিশ সূত্রে খবর, ওই চিকিৎসক তদন্তকারীদের বলেছেন তিনি চা খেতে পারবেন না জানিয়ে যখন ওই নারীর সঙ্গে যখন হাত মিলিয়েছিলেন, তখন একটা হালকা টান অনুভব করেছিলেন আঙুলে। কিন্তু তখন কিছু খেয়াল করেননি। পরে যখন আংটি বেপাত্তা দেখেন, তখন বিষয়টি তার মনে পড়ে।

তদন্তকারীরা বৃদ্ধ চিকিৎসকের বর্ণনা অনুযায়ী ওই নারীর কয়েকটি স্কেচও তৈরি করেছেন। মোহনচাঁদের বর্ণনা অনুযায়ী, ওই নারী সুবেশা এবং সম্ভ্রান্ত। ইংরেজি ও বাংলা মিশিয়ে কথা বলছিলেন। সব মিলিয়ে মোহনচাঁদের সন্দেহের কোনো কারণ ছিল না। কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘এটা নতুন ঘরানার প্রতারণা। পুজোর মুখে এই প্রতারকদের উৎপাত শুরু হয়। এদের অধিকাংশকেই দেখলে বোঝা যায় না।’ অভিযুক্তের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। এরপর রাস্তাঘাটে অজানা কারো সঙ্গে করমর্দনের ঘটনা শুনে হাত গুটাচ্ছেন অনেকেই।

"