চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ

তিন দশকেরও বেশি সময় পর চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন পদবঞ্চিতরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কলেজের সামনে রাস্তার ওপর অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। কমিটি প্রত্যাখ্যান করা ছাত্রলীগ কর্মীরা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তাদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে কমিটিতে ছাত্রদল ও শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্তদের পদ দেওয়া হয়েছে।

গত সোমবার রাতে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের ২৫ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। কমিটিতে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি এবং সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। মাহমুদুল করিম প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী এবং সবুজ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির অনুসারী। কিন্তু এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কলেজের সামনের রাস্তায় বাঁশ দিয়ে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের কলেজের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়।

কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া সহসভাপতি ওবায়েদুল হক বলেন, ‘কলেজে শিবিরবিরোধী অন্দোলনে জড়িত ছিল তাদের বাদ দিয়ে কাউকে না জানিয়ে রাতের আঁধারে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কমিটি করেছেন। শিবির-ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের পদ দিয়েছেন। এর প্রতিবাদে আমরা ছয়জন কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছি।’

অভিযোগ অস্বীকার করে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, ‘এত বছর পর শিবিরের দখল থেকে আমরা কলেজটাকে মুক্ত করেছি। আমরা চাই, ছাত্রলীগ সেখানে মিলেমিশে রাজনীতি করুক। ক্যাম্পাসে যাদের অবস্থান ভালো তাদের আমরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছি।’

চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফ হোসেন বলেন, বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এবং সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। আশির দশকের মাঝামাঝিতে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের দখল নিয়ে একক রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল ইসলামী ছাত্রশিবির। তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় এ দুই কলেজে অন্য ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রম এক প্রকার নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৮৪ সালে সত্যজিৎ চক্রবর্তী সুজনকে আহ্বায়ক করে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটি হয়েছিল। চট্টগ্রামের শীর্ষ এ কলেজে দীর্ঘদিন ছাত্রশিবিরের আধিপত্যের মধ্যে ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। দীর্ঘদিন পরে সংগঠনটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হলে এ নিয়ে নিজেদের মধ্যেই বিরোধ সৃষ্টি হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close