নওগাঁ প্রতিনিধি

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ভুল চিকিৎসায় গর্ভের সন্তান মারা যাওয়ার অভিযোগ

নওগাঁ শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ‘ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল’-এ ভুল চিকিৎসায় খাদিজা বেগম নামের এক প্রসূতির গর্ভের সন্তান মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদরের ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় রোগীর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল ঘেরাও করলে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খাদিজা বেগম মহাদেবপুর উপজেলার উত্তরগ্রাম ক্ষুদ্রনারায়ণপুর গ্রামের এনামুল হকের স্ত্রী। হাসপাতাল ও রোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে খাদিজা বেগমকে ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালে চেকআপ করানোর জন্য গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ফাতেমা কামরুন নাহারের কাছে নিয়ে আসেন। এরপর সেখানে আলট্রাসনোগ্রাম করে ডা. ফাতেমা কামরুন নাহার জানান পেটে বাচ্চা মারা গেছে। এরপর আবারও আলট্রাসনোগ্রাম করে দেখে বাচ্চা জীবিত আছে। এরপর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করে আবার দুই সপ্তাহ পর দেখা করতে বলেন। ঘটনার দিন সোমবার আবারও খাদিজা বেগমের আলট্রাসনোগ্রাম কারনো হয়। সেখানে বাচ্চা মৃত বলে জানান ডা. ফাতেমা কামরুন নাহার। একই মেশিনে দুই রকম রিপোর্ট আসার কারণে রোগীর লোকজন ডা. ফাতেমা কামরুন নাহারের ওপর চড়াও হয়। এ সময় ডা. ফাতেমা কামরুন নাহার রোগীর লোকজনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে নানা হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনায় রোগীর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল ঘেরাও করলে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় আলট্রাসনো মেশিনসহ ডা. ফাতেমা কামরুন নাহারকে হাসপাতাল থেকে দ্রুত অপসরণের দাবি জানায় বিক্ষুব্ধরা। তাদের অভিযোগ সিভিল সার্জন নিয়মিত বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো মনিটরিং করেন না। সেখানে বার বার দুর্ঘটনা ঘটানোর পরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। ভালো চিকিৎসা ও বিভিন্ন ওষুধ দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এবং এতে প্রতারিত হচ্ছেন রোগী ও তার স্বজনরা। এদের লাগাম টেনে ধরা দরকার বলে মন্তব্য করেন তারা।

খাদিজা বেগমের স্বামী এনামুল হক বলেন, ডা. ফাতেমা কামরুন নাহারের প্রেসক্রিপশনের ওষুধে আমার সন্তান মারা যায়। একই মেশিনে দুই রকম রিপোর্ট ও ভুল চিকিৎসার কারণে আমার বাচ্চা মারা গেছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালের প্রশাসনিক ইনচার্জ মাইনুল ইসলাম বলেন, আলট্রাসনো মেশিনে দুই রকম রিপোর্ট আসার বিষয়টি জানতে পেরে সনোলজিস্ট ডা. আনছার আলীকে দিয়ে মেশিন চেক করাই। তিনি চেক করে জানিয়েছেন মেশিনে কোনো প্রকার ত্রুটি নেই। বাচ্চা কী কারণে মারা গেছে, তিনি বলতে পারবেন না বলে জানান।

ডা. ফাতেমা কামরুন নাহারের সঙ্গে সেল ফোন রিসির্ভ না করায় কোনো বক্তব্য যায়নি। নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. মুমিনুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি সামাধান না হওয়া পর্যন্ত ডা. ফাতেমা কামরুন নাহার যেন ওই হাসপাতাল চিকিৎসাসেবা দিতে না পারে সে জন্য কর্তৃপক্ষকে নিষেধ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালে ইতোপূর্বে আরো রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি, বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো নিয়মিত মনিটরিং না করার অভিযোগ অস্বীকার করেন। নওগাঁ সদর থানার ওসি আবদুল হাই বলেন, রোগীর পরিবার থেকে থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close