শেকৃবি সংবাদদাতা

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

শেকৃবিতে সফল গবেষণা

বাড়ির ছাদে স্পেরুলিনা চাষ

সমুদ্রের পানিতে জন্মানো পুষ্টিগুণে ভরপুর স্পেরুলিনা এবার চাষ করা যাবে বাড়ির ছাদেইÑ এমনটি দাবি করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের একদল গবেষক। প্রায় এক বছর ধরে গবেষণার পর দেশে প্রথম এ সাফল্য পায় তারা।

স্পেরুলিনা এক ধরনের শৈবাল। যার বৈজ্ঞানিক নাম Arthrospira Maxima। এটিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, লৌহ ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। গুণাগুণের কারণে একে সুপার ফুড বলা হয়। দেশে স্পেরুলিনা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হলেও ভেজিটেবল হিসেবে এটিই প্রথম। গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দিন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আমরা ল্যাবে গবেষণার পর মাত্র ১/২ কেজি প্রোডাক্ট নিয়ে ছাদে ৯৬টি বাকেটে এর চাষ করি এবং ভালো ফল পাই। থাইল্যান্ড থেকে আনা বাকেটগুলোর দাম বেশি হওয়ায় আমরা দেশের তৈরি আরএফএলের ফুড গ্রেডেড বক্স ব্যবহার করে খরচ ১০ ভাগের ১ ভাগে কমিয়ে এনেছি। বর্তমানে প্রতিটি ড্রাম থেকে আমরা ১৫ গ্রাম করে পাচ্ছি।

পুষ্টিগুণের কথা জানতে চাইলে ড. জামাল বলেন, ১০০ গ্রাম স্পেরুলিনায় ৩৭৪ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায় এবং ৫৮২ গ্রাম কলিজার সমপরিমাণ লৌহ পাওয়া যায়। এতে দুধের চেয়ে ১৬% এবং গরুর মাংসের চেয়ে ৩০% বেশি ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এটি গর্ভবতী, বন্ধ্যা ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার। তাছাড়া অকাল বার্ধক্য রোধ, বয়স্কজনিত রোগ, স্কিন ভাঁজ রোধ ও প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এটি শরীরের হ্যাবিম্যাটার ও পাথর দূর করতেও সাহায্য করে। তবে নেই কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এমন পুষ্টিগুণের কারণে বিজ্ঞানীরা এটিকে ফিউচার বা মিরাকল ফুড বলে থাকে।

গবেষকরা জানান, স্পেরুলিনার কোনো স্বাদ বা গন্ধ নেই, তাই শুকিয়ে গুঁড়া করে যেকোনো খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। তবে কাঁচা অবস্থায় এর পুষ্টিগুণ বেশি।

পৃথিবীর অনেক দেশেই এটি ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হলেও আমাদের দেশে এর ব্যবহার দেখা যায় না। সূর্যের আলো এখানে মুখ্য বিষয় হওয়ায় বাড়ির ছাদে স্পেরুলিনা চাষ খুলে দিতে পারে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার; এমনটিই আশা গবেষকদের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close