উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

  ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

উখিয়ায় হর্ষবর্ধন শ্রিংলা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা করবে ভারত

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ভারত। রোহিঙ্গাদের সংকটের শুরু থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল ভারত সরকার। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত ভারত বাংলাদেশের পাশে থেকে কাজ করবে। ইতোমধ্যেই দুই দফা ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে ভারত। গতকাল সোমবার দুপুরে উখিয়া বালুখালী-১২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণকালে এসব কথা বলেন তিনি।

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, গত এক বছরে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকারের এই মানবিক আচরণ ভারত ও বিশ্বের সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে ভারত সরকারের তৃতীয় পর্যায়ের ত্রাণ সহযোগিতা ১ মিলিয়ন লিটারের বেশি সুপার কেরোসিন তেল এবং ২০ হাজার কেরোসিন স্টোভ হস্তান্তর করা হয়েছে।

শ্রিংলা বলেছেন, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বিদেশমন্ত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য অপারেশন ইনসানিয়াতের আওতায় ত্রাণ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এ সময় প্রথম দফায় ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ৫৩ টন খাদ্যসামগ্রী পাঠায় ভারত। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, চিনি, লবণ, বিস্কুট, গুঁড়ো দুধ, নুড্লস, সাবান, মশারি ও তেল। চলতি বছরের মে মাসে ১০৪ টন গুঁড়ো দুধ, ১০২ টন শুঁটকি মাছ, ৬১ টন শিশুখাদ্য, ৫০ হাজার রেইন কোট এবং ৫০ হাজার গামবোট।

ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ২৫০টি বাড়ি নির্মাণের কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে। এ ছাড়া মিয়ানমারের মংডু জেলার ক্যিং সং নামের একটি গ্রামে ৫০টি বাড়ির ভিত্তি নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। এ বাড়িগুলো নির্মাণের উদ্দশ্য হলো উৎখাত হওয়া রোহিঙ্গা ব্যক্তিদের বাংলাদেশ থেকে নিরাপদ প্রত্যাবাসনে সহায়তা করা।

পরিশেষে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, ভারত প্রয়োজনের সময় সর্বদা বাংলাদেশের পাশে থাকছে। আমাদের দুদেশের সম্পর্কের ভিত্তি বিশ্বাস, বন্ধুত্ব ও শহীদদের আত্মত্যাগ, যা যেকোনো কৌশলগত সম্পর্কের ঊর্ধ্বে। বন্ধুত্বের এই চেতনায় আমরা তাদের বোঝা হালকা করতে এগিয়ে এসেছি এবং ভবিষ্যতেও এ সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম, কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি হাফিজ আহমেদ মজুমদার, মহাসচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন প্রমুখ। দুপুর দেড়টায় ত্রাণ বিতরণ শেষে ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। সেখানে আশ্রিত নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে ভারতের হাইকমিশনার কুতুপালং হিন্দু শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করে দুপুর ২টায় উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ত্যাগ করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close