রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

রূপগঞ্জে গুলিবিদ্ধ তিন যুবকের লাশ উদ্ধার

পরিবারের দাবি পুলিশ ওদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পূর্বাচল উপ-শহরের আলমপুরা এলাকার ৯ নং সেক্টরের ১১ নং ব্রিজের নিচ থেকে ওই তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন, ঢাকা জেলার মহাখালীর নিকেতন বাজার এলাকার মৃত শহিবুল্লাহর ছেলে সোহাগ, ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার গোরেলা এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে শিমুল আজাদ ও মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী থানার পাইকপাড়া এলাকার মৃত আ. ওহাবের ছেলে নূর হোসেন বাবু। নিহত ওই তিন যুবকের স্বজনদের অভিযোগ, ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই তিন যুবককে বুধবার রাতে মাওয়া ঘাট এলাকা থেকে উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়। শুক্রবার সকালে উপজেলার রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পূর্বাচল উপ-শহরের আলমপুরা এলাকার ৯ নং সেক্টরের ১১ নং ব্রিজের নিচ থেকে ওই তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহম্মেদ জানান, উপজেলার পূর্বাচল উপ-শহরের আলমপুরা এলাকার ৯ নং সেক্টরের ১১নং ব্রিজের নিচে ওই তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পরে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ ওই তিন যুবকের লাশ উদ্ধার করে। ফরিদ আহাম্মেদ আরো জানান, এ সময় নিহত নূর হোসেন বাবুর পকেট থেকে আনুমানিক ৬০-৬৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে থানায় এসে ওই তিন যুবকের লাশ শনাক্ত করেন।

শিমুলের মা চায়না বেগম জানান, সোহাগ, শিমুল আজাদ ও নূর হোসেন বাবু তিন বন্ধু। শিমুল আজাদ ও নূর হোসেন বাবু ঝুটের ব্যবসা করে আর সোহাগ ডিস ক্যাবলের ব্যবসা করে। সোহাগ ও নূর হোসেন বাবু মিলে বন্ধু শিমুল আজাদের বাড়িতে বেড়াতে যায়। গত বুধবার রাতে তারা তিন বন্ধু শিমুলের বাড়ি থেকে মাওয়া হয়ে ঢাকা ফিরছিল। বুধবার রাত ১ টার দিকে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা হয় বলে জানান। এরপর থেকে তিনজনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন দিকে খোঁজাখুঁজি করে তাদেরকে না পেয়ে ঢাকার সায়দাবাদ টার্মিনালের বাস কাউন্টারে যোগাযোগ করি। বাস কাউন্টারে যোগাযোগ করলে বাসের সুপার ভাইজার জানায় মাওয়া থেকে ঢাকা আসার পথে সোহাগ, শিমুল আজাদ ও নূর হোসেন বাবুকে ডিবি পরিচয়ে বাস থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার সকালে খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানায় এসে লাশ শনাক্ত করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, কাঞ্চন থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৩০০ ফুট রাস্তাটি। এ রাস্তার উভয় পাশে তেমন কোনো জনবসতি নেই। ভ্রমণপিপাসু লোজন ৩০০ ফুট সড়ক ও তার আশাপাশে ঘুরতে আসেন, কিন্তু এলাকাটি সন্ধ্যার পর থেকেই নীরব হয়ে যায়। রাতের আধারে অপরাধীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। অপরাধীরা নিরাপদ স্থান হিসেবে এ এলাকাটিকে ব্যবহার করে। প্রায় সময় ৩০০ ফুট সড়কের আশপাশে অপরাধীরা হত্যা করে লাশ ফেলে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশি টহল ব্যবস্থা না করায় দিন দিন অপরাধ প্রবণতা বেড়েই চলছে।

রূপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির জানান, তিন যুবককে হত্যাকান্ডের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। মরদেহগুলোকে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close