প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

মরুভূমিতে বৃষ্টি বাড়াবে সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ

সাহারা মরুভূমিতে প্রচুর সংখ্যক সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল এবং বায়ু বিদ্যুতের জন্য টারবাইন স্থাপন করার কারণে সেখানকার বৃষ্টিপাত, গাছপালা এবং তাপমাত্রার বড় প্রভাব ফেলবে। গবেষকরা দেখেছেন, বায়ু বিদ্যুতের টারবাইন এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের মাত্রা ও পরিমাণ দ্বিগুণ করতে পারে। বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সায়েন্স’-এ প্রকাশ পাওয়া একটি গবেষণাপত্রে তারা এসব কথা বলেন। বিজ্ঞানীদের বক্তব্যÑ এই নবায়নযোগ্য শক্তির বৃহৎ পরিসরে প্রসার এই সাহারা অঞ্চলের পরিবেশ ও আবহাওয়ায় পরিবর্তন আনবে। গতকাল সোমবার বিবিসি এ খবর জানায়। গবেষকরা এই অঞ্চলটির প্রতি মনোযোগী হয়েছেন, কেননা এই বিশাল জনবিরল অঞ্চল থেকে যে পরিমাণ সৌরশক্তি এবং বায়ুশক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে পরিণত করা সম্ভব তা মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের প্রায় কাছাকাছি। গবেষকদের ধারণা, মরুভূমিতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের জন্য ব্যাপক পরিমাণে এসব স্থাপন করলে তা থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে তা বর্তমান সময়ের চারগুণ।

এর আগেও গবেষণায় দেখা গিয়েছিল যে, বায়ুবিদ্যুৎ ও সৌরবিদ্যুতের জন্যে স্থাপিত প্যানেল ও টারবাইন প্রভাব ফেলে তাপমাত্রার ওপর। কিন্তু এই গবেষণায় আরো প্রমাণ হয় যে এসব প্রভাব ফেলে উদ্ভিদের ওপরেও। এই বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের প্রধান ড. ইয়ান লি বলেন, ‘আমাদের এই মডেল থেকে যে ফলাফল আমরা পাচ্ছি তাতে দেখা যায় যে, সাহারায় এইসব সৌর এবং বায়ুবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট বৃষ্টিপাত বাড়াবে, বিশেষ করে সাহল অঞ্চলে। ২০ মিলিমিটার থেকে বেড়ে বাৎসরিক বৃষ্টিপাত হবে ৫০০ মিলিমিটার।’

“ফলস্বরূপ গাছপালার উৎপন্নের হার বাড়বে ২০%।” গবেষণাটিতে দেখা যায়, সাহারার দক্ষিণের আধা শুষ্ক অঞ্চল সাহলের যেখানে বায়ু বিদ্যুতের প্ল্যান্ট ছিল সেখানে প্রতিদিন ১.১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

কীভাবে টারবাইন এবং সৌর প্যানেল বৃষ্টিপাত বাড়ায়? বায়ু বিদ্যুতে টার্বাইনের পাখার ঘূর্ণন বায়ুমন্ডলের ওপরের গরম বাতাসকে মিশ্রিত করে। যার ফলে বাষ্পীভবনের সৃষ্টি হয়, বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং গাছপালা জন্মাতে সাহায্য করে। ‘বাতাসের ঘনত্ব বাড়ায় এই টার্বাইনের ঘূর্ণন এবং বায়ুকে নিম্নচাপ অঞ্চলে প্রবাহিত করে,’ বলছিলেন ড. লি। আর এর ফলে বাতাস ঠান্ডা হয়, আর্দ্রতা বাড়ে এবং বৃষ্টিপাত বাড়ায়, এভাবেই বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন তিনি। গবেষণা রিপোর্টটি বলছে, সৌর প্যানেল মূলত ভূমন্ডলে সূর্যের আলোর প্রতিফলন কমায়। এটি এলবেডো এফেক্ট হিসেবে পরিচিত। ইতিবাচক এলবেডো এফেক্ট ৫০ ভাগ বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি এবং গাছপালা জন্মাতে সাহায্য করে থাকে।

মানুষ কীভাবে উপকৃত হবে? গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, সাহারা, সাহেল বা মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি অঞ্চলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বাস। আর সেখানে এমন পরিবর্তন স্থায়ী সমাধান দেবে একইসঙ্গে বিদ্যুৎ, খাদ্য এবং পানির। গবেষণাপত্রটির লেখকরা বলছেন, ওইসব টারবাইন এবং সৌর প্যানেলের থেকে সৃষ্ট তাপ খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। ড. লি বলছেন, ‘ গ্রিন হাউজ গ্যাসের কারণে বৃদ্ধি পাওয়া তাপমাত্রার তুলনায় এসব স্থানীয় বায়ু ও সৌর বিদ্যুৎ প্লান্টের উষ্ণতা একেবারেই কম।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close