হাসান ইমন

  ১৭ আগস্ট, ২০১৮

২৪ ঘণ্টায় কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা

এবারও ২৪ ঘণ্টার ভেতর কোরবানির বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন (উত্তর ও দক্ষিণ)। বর্জ্য অপসারণের গতি আনতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণে ২০ হাজার ৭৭১ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োজিত রাখা হয়েছে। নতুন সংযুক্ত ৩৬ ওয়ার্ডসহ উভয় সিটি করপোরেশনে ১ হাজার ৫৪ পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বর্জ্য অপসারণের প্রায় পাঁচ লাখ পলিথিনের ব্যাগ সরবরাহ করবে সংস্থা দুটি। আর দ্রুত ও নির্ধারিত সময়েই বর্জ্য অপসারণে হটলাইন খোলা থাকবে বলে জানান দুই সিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের মতো এবারও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২৪ ঘণ্টার ভেতর বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঈদের দিন দুপুর ২টা থেকে বর্জ্য অপসারণের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন দুই মেয়র। আর এ বর্জ্য অপসারণের ২০ হাজার ৭৭১ পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মধ্যে দক্ষিণ সিটিতে ১১ হাজার ২৭১ জন এবং উত্তর সিটি করপোরেশনে ৯ হাজার ৫০০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে মাঠে থাকবেন। এ ছাড়া ডিএনসিসিতে বর্জ্যবাহী ট্রাক ১৫০টি, ড্রাম্প ট্রাক ১৯টি, পাঁচটি পে-লোডার, তিনটি হুইল ডোজার, ১১টি পানির গাড়ি (জেট স্প্রেসহ), স্কিড লোডার চারটি, বেকহো লোডার চারটি, ট্রাক (আউটসোর্সিং) ৮০টি, বর্জ্যবাহী ব্যাগ থাকবে ৪ লাখ পিস, ব্লিচিং পাউডার ৪০ হাজার কেজি, স্যাভলন ১০০ লিটার ও ফিনাইল ২০০ লিটার রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি বোলডোজার, দুটি লং আর্ম স্কেভেটর, তিনটি চেইন ডোজার, দুটি হুইলডোজার কাজের গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য ভাড়া নেওয়া হয়েছে। ডিএসসিসিতে ১০টি পে-লোডারসহ ৩৫০টি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হবে।

এ ছাড়া আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাট ব্যবস্থাপনা, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান ঈদ জামাতের অনুষ্ঠান এবং কোরবানিজনিত পশুর বর্জ্য অপসারণের সব প্রস্তুতি গ্রহণ ও ওই কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে ৫ আগস্ট থেকে আগামী ২৫ আগস্ট ২০১৮ পর্যন্ত ডিএসসিসিতে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটিও বাতিল করা হয়েছে।

কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আ হ ম আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য আমরা এবার হটলাইন চালু করেছি। হটলাইন নম্বর হলো ০৯৬১১০০০৯৯৯। এ ছাড়া আমরা ১ লাখ ৭৫ হাজার বর্জ্যবাহী ব্যাগ বিতরণ করছি। কোরবানির বর্জ্য অপসারণে লিফলেট ও মাইকিং করা হবে।’

নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই রাস্তায় পশু জবাই করবেন না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধায় এবং দুর্গন্ধ থেকে নগরকে মুক্ত রাখতে নির্ধারিত জায়গায় পশু জবাইকে আমরা উৎসাহিত করছি।’ নিজ বাড়িতে কোরবানির পশু জবাই করলেও বর্জ্যগুলো রাস্তা, ড্রেন ও খালে না ফেলার অনুরোধ জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আবুল হাসনাত মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসিরি অঞ্চল-৩-এ (মহাখালী) অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কন্টোল রুম স্থাপন করা হবে। হটলাইন নম্বর হলো ০২৯৮৩০৯৩৬। এর বাইরে পাঁচটি অঞ্চলে মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা যাবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। পাঁচটি হলোÑ উত্তরা ০১৭১৭১০২০২৫, মিরপুর ০১৭১১-৩১৩২৮৯, মহাখালী ০১৯২৩১১৩৬৩৬ মিরপুর (অঞ্চল-৪) ০১৭৩৩৮৯৫৫৩২ ও কারওয়ান বাজার ০১৭১১৫৭৭৪৭৪। এসব মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

আসন্ন কোরবানির ঈদে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে প্রায় পাঁচ লাখ পশু কোরবানি করা হবে বলে মনে করছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন (উত্তর-দক্ষিণ)। এ থেকে কমপক্ষে ৩০ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হবে। এসব বর্জ্য অপসারণে আগের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এ বছর প্রস্তুতি নিয়েছে সংস্থা দুটি। বেঁধে দেওয়া ২৪ ঘণ্টা সময়সীমার পর রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখলে তা কঠোরভাবে মনিটর করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তাই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অতি গুরুত্বের সঙ্গে নজরদারি করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাই ও বর্জ্য অপসারণে নগরবাসীকে সচেতন করতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। দৈনিক, সাপ্তাহিক পত্রিকা, টিভি, রেডিওসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পাশাপাশি মসজিদ-মাদরাসার ইমাম, খতিব ও শিক্ষকদেরও প্রচারণার কাজে যুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নাগরিকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে কয়েক হাজার লিফলেট।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close