প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১২ আগস্ট, ২০১৮

ভূমিধসের শঙ্কায় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে

প্রবল বৃষ্টিপাতের পর কক্সবাজারের অধিকাংশ রোহিঙ্গা ক্যাম্প এখন প্লাবিত। এতে বাড়ছে দুর্ভোগ, ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগবালাই। পানিবাহিত ডায়রিয়া, আমাশয় ও কলেরার প্রকোপ এতটাই বেড়েছে যে, মহামারির আকার নিয়েছে। এ ছাড়া বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি তো আছেই। এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।

বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্প থেকে অন্তত ২৪ হাজার রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র উইলিয়াম স্পিন্ডলার।

গতকাল শনিবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে উইলিয়াম স্পিন্ডলার বলেন, এ পর্যন্ত চরম ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেÑ এমন অন্তত ৪১ হাজার রোহিঙ্গার অর্ধেকের বেশি নিরাপদ আশ্রয়ে গেছে। আর প্রায় ১৭ হাজার শরণার্থীকে সরিয়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির প্রায় ১৩ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত। বর্তমানে এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বসতি। এখানে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে।

জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১১ মে থেকে আনুমানিক ৪৯ হাজার শরণার্থী বিরূপ আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রবল বাতাস ও ঝড়ে। ১৫ হাজারেরও বেশি ভূমিধসে, ৫ হাজার ৪০০ বন্যায়। জলাবদ্ধতা ও অগ্নিকান্ডে তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গা চরম বিপাকে পড়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গিয়ে বেশ ধকল পোহাতে হয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ও সহযোগী সংস্থাগুলোকে।

ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কুতুপালং ক্যাম্পে প্রায় ৩২ কিলোমিটার রাস্তা, ৪৫ কিলোমিটার ধাপ ও ৬৩ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। ড্রেনের কাজ হয়েছে ৯৪ কিলোমিটার। এ ছাড়া দুই হাজার ৩২৪ মিটার ব্রিজ নির্মাণ করে সংযুক্ত করা হয়েছে ক্যাম্পের আশপাশের এলাকা।

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, এ পর্যন্ত জরুরি ত্রাণ হিসেবে ১১৬টি স্টোরেজ কনটেইনার এবং ২০টি সামাজিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কারণ কখনো ছোট খুপরি পুড়ে গেছে, তো কখনো বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প। কক্সবাজারে এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও গড়ে তুলেছে ইউএনএইচসিআর।

সংস্থাটির মুখপাত্র স্পিন্ডলার বলেন, কয়েক মাস ধরে যেসব রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ নিয়েছে, তারাই এখন পুরোপুরি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিরূপ আবহাওয়া মোকাবিলা যাতে রোহিঙ্গারাই করতে পারে তার জন্য নিবিড় প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

চলতি বর্ষা মৌসুমে কক্সবাজার এলাকায় কয়েক বছরের মধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা বাংলাদেশ সরকার ও সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকিতে থাকা হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close