দিনাজপুর ও পার্বতীপুর প্রতিনিধি

  ২৮ জুলাই, ২০১৮

বড়পুকুরিয়া খনি ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঈদের ছুটি বাতিল

দ্রুত সংকট মোকাবিলায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ বলেছে, আগামী ১০ আগস্টের পর দৈনিক ৩০০ টন এবং সেপ্টেম্বর মাসে পুরো মাত্রায় কয়লা উৎপাদন করা যাবে। এরপর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হবে। গতকাল শুক্রবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা ছুটি বাতিলের এই তথ্য জানান।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, বিদ্যুৎ সচিব আহমেদ কায়কাউস, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়েজউল্লাহ এবং পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ। সকাল ৯টা থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা তারা বিদ্যুৎকেন্দ্র ও খনি এলাকা পরিদর্শন করেন। এরপর বিদ্যুৎ ও খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন।

কয়লা লোপাট হওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি সচিব জানান, কয়লা অবৈধভাবে বিক্রি হয়েছে কি না? বিক্রি হলে টাকা কোথায় গেল? তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে। তিনি জানান, খনি উন্নয়নের কাজ চলছে। ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কয়লা উৎপাদন পুরো মাত্রায় শুরু হবে। তখন বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ করা যাবে। বিদ্যুৎ সচিব বলেন, তারা দ্রুত বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর চেষ্টা করছেন। খনি ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের আগামী ঈদের ছুটি বাতিল করতে বলা হয়েছে।

এলাকায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের বিষয়ে তিনি জানান, বাংলাদেশের যা চাহিদা তা পূরণ করার মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বর্তমানে রয়েছে। দেশের অন্যান্য কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন করে এ অঞ্চলে বিতরণ করা হচ্ছে। দূরবর্তী এলাকা থেকে আনার কারণে একটু ভোল্টেজ সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, রংপুরের আট জেলায় ১০০ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি এখনো রয়েছে। তাই এক থেকে দেড় ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হচ্ছে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জানান, কয়লা উধাও হওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই হালকা করে দেখার উপায় নেই। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, কয়লা উত্তোলনকারী চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসিকে দ্রুত কয়লা উৎপাদন শুরু করতে বলা হয়েছে। চীনের ও স্থানীয় শ্রমিকরা ঈদের ছুটি নিবেন না। ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি অত্যন্ত সংরক্ষিত এলাকা। এরপরও মজুদ কয়লার হদিস নেই। এ এলাকায় বাইরের লোক প্রবেশ করতে পারে না। ফলে খনির দায়িত্বে যারা ছিলেন, দায় তাদের। চুরি বা লোপাট হলে তাদের মাধ্যমেই হয়েছে।

খনির কমকর্তারা দাবি করছেন, কয়লা ঘাটতির ঘটনাটি সিস্টেমলস, হিসেবের ভুল। কিন্তু বিশাল অঙ্কের এই কয়লা উধাও সিস্টেম লস হিসেবে মানতে নারাজ জ্বালানি বিভাগ। এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে তারা মনে করছেন। তারা বলেছেন, মামলা হয়েছে। দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। জানা গেছে, স্থানীয় কয়লা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের যোগসাজশে খনির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীরা এই লোপাটের সঙ্গে জড়িত।

প্রসঙ্গত, বড়পুকুরিয়ায় এক লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লার হদিস নেই। কয়লার অভাবে বন্ধ রয়েছে ৫২৫ মেগাওয়াটের দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ ঘটনায় মামলার তদন্তে নেমেছে দুদক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist