মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
মধুখালীতে ধর্ষণচেষ্টা
বিচারপ্রার্থীর পরিবারকে তাড়িয়ে দিলেন জুট মিল কর্মকর্তা
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার একটি পাটকলের তিন শ্রমিক ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন। শিশুটি ওই মিলের এক বাবুর্চির মেয়ে। এ ঘটনায় মিল প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে বিচার না পেয়ে শিশুটির বাবা মধুখালী থানায় মামলা করেন। এ কারণে ওই শিশুর পরিবারকে মিল ক্যাম্পাস থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনা মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের মছলন্দপুর-মাঝিবাড়ি এলাকার গোল্ডেন জুট মিলের। শিশুটির বাবা দেড় বছর ধরে ওই মিলে শ্রমিকদের রান্নার কাজ করে আসছিলেন।
গত ১৬ জুলাই সন্ধ্যার দিকে পেয়ারা দেওয়ার কথা বলে ওই মিলের তিন শ্রমিক শিশুটিকে মিলের পাশে একটি পাটখেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। শিশুটির মা শিশুটিকে খুঁজতে গিয়ে ওই পাটখেতের কাছে গেলে ওই তিন শ্রমিক শিশুটিকে ফেলে পালিয়ে যান।
শিশুটির বাবা পরদিন সকালে বিষয়টি মিলের ডিজি এম মো. রফিকুল ইসলামকে জানান। রফিকুল বিচার করে দেওয়ার নামে ওই তিন শ্রমিকের প্রত্যেককে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে জরিমানা করেন। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত মনপূত না হওয়ার গত ১৭ জুলাই শিশুটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ওই তিন শ্রমিককে আসামি করে মধুখালী থানায় ধর্ষণ চেষ্টার একটি মামলা করেন।
এ মামলার তিন আসামির একজন হলেন আলামীন। তিনি কামারখালী ইউনিয়নের গাজীখালী গ্রামের বাসিন্দা। এ মামলার অপর দুই আসামি ১৬ বছর বয়সী দুই কিশোর।
শিশুটির মা এ প্রতিবেদকে বলেন, ‘মিলের ডিজিএমের কথামতো শ্রমিকদের জরিমানা করার সিদ্ধান্ত আমরা মেনে না নেওয়ায় গত ২০ জুলাই আমাদের মিল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে আমরা ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় নিজেদের গ্রামের বাড়িতে আছি।’
ডিজিএম মো. রফিকুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা নিজেরা মীমাংসা করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ওই তিন শ্রমিককে জরিমানাও করা হয়েছিল। কিন্তু মেয়ের অভিভাবক আমাদের সিদ্ধান্ত না মেনে থানায় গিয়ে মামলা করেছেন।’
মামলা করায় মিল থেকে ওই বাবুর্চির পরিবারকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর পুলিশের পরামর্শে আমরা তাদের মিল থেকে বের করে দিয়েছি।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. আবদুল আজিজ শেখ জানান, এ মামলা হওয়ার পর গত ১৯ জুলাই ওই তিন শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে জেলহাজতে আছেন। তিনি বলেন, শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে এবং শিশুটি ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তবে শারীরিক পরীক্ষার প্রতিবেদন এখন পর্যন্ত হাতে পাওয় যায়নি।
"