নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ জুলাই, ২০১৮

মানুষ মানুষের জন্য...

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না, ও বন্ধু... ভারতের বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ভূপেন হাজারিকার সেই আবেদনময়ী গানের সুরেই বলতে হয়-হ্যাঁ পারে। ক্ষুধার্ত, হতদরিদ্র ও অসুস্থ মায়ের সেবা দিতে ছোট্ট শিশুর অনন্ত চেষ্টার খন্ড দৃশ্যগুলো যখন খবরের কাগজে তুলে ধরলেন সাংবাদিক, শিক্ষার্থীর পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল, তখন তাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন অনেকে। দিয়েছেন নানা আশ্বাসও। কিন্তু ঢাকার কলাবাগানের ফুটপাতে অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকা ফরিদা ও তার সন্তানদের ‘ঠিকানা’ হয়ে উঠেছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভিন। তাদের খাওয়া-পরা, থাকার জায়গা করে দেওয়াসহ আয়ের পথও খুলে দিলেন তিনি।

গতকাল বুধবার দুপুরে কলাবাগানের ফুটপাতে তাদের সঙ্গে দেখা করে নানা ‘উপহার’ দেন। পরে রাতেই তাদের নিয়ে কুড়িগ্রামে রওয়ানা হন।

গত ৬ জুলাই রাজধানীর সোবহানবাগ মসজিদের কাছে জ্বর নিয়ে ফুটপাতে পড়েছিলেন ফরিদা। পরদিনও রাস্তায় পড়েছিলেন তিনি। এদিন সন্ধ্যায় মাকে বাঁচাতে চেষ্টা করছিল তার দুই শিশু সন্তান। তারা প্লাস্টিকের বোতলে করে মায়ের মাথায় পানি ঢালছিল। সেই দৃশ্য দেখে মুঠোফোনের ক্যামেরায় ধারণ করে ও মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হন শিক্ষার্থী পারভেজ হাসান। এরপর তিনি ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। পরিবারটির অসহায়ত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশও হয়। এই সংবাদ নজরে আসে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভিনের। তিনি তাৎক্ষণিক একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবারটির দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস নেন। সেই আশ্বাস থেকেই তিনি গতকাল ঢাকায় পরিবারটি সঙ্গে দেখা করেন।

সুলতানা পারভিন ৬ মাস আগে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন। এরপর থেকেই তৃণমূল মানুষের খোঁজ নিতে ছুটে চলছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। জনবান্ধব জেলা প্রশাসক হিসেবে সেখানকার মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন তিনি।

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভিন বলেন, ফরিদা তার স্বামী-সন্তানদের নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছানোর পরই তাদের শহরে একটি ভাড়াবাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। সেখানে তাদের খাওয়া দাওয়াসহ সার্বিক দায়িত্ব সদর ইউএনও পালন করবেন। এর আগেও তারা শহরের একটি খাস জমিতে থাকতেন। সেই জমিতেই তাদের ঘর করে দেওয়া হবে। যতদিন পর্যন্ত তাদের নতুন ঘরে তুলে না দেওয়া হবে ততদিন তারা ভাড়া বাড়িতেই থাকবেন।

তিনি বলেন, ঘর তুলে দেওয়ার পর ফরিদার স্বামী আনসার আলীকে বাড়ির আশপাশেই একটি দোকান করে দেওয়ার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে আমরা নিয়েছি। দোকানে মালামালও দেওয়া হবে। মূলত ফরিদার সংসার সাজানোর জন্য যা যা প্রয়োজন সব কিছুই আমরা করব। গরু-ছাগলও কিনে দেব। তার মেয়ে ও দুই ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করার দায়িত্বও আমি নিয়েছে। আশা করছি তারা ভালো থাকবে। আমি যতদিন কুড়িগ্রামে থাকব তাদের দেখভাল করার দায়িত্ব আমার। তারা যেন ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করে দিতে সদর ইউএনওকে বলা আছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist