আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১০ জুলাই, ২০১৮

থাই গুহায় ১৬ দিন

মুক্ত বাতাসে আরো চার কিশোর এখনই স্পর্শ নয়

থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের থাম লুয়াং গুহায় ১৬ দিন আটকে থাকা আরো চার কিশোর ফুটবলার মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিল। গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযানে তাদের বের করে আনেন উদ্ধারকারীরা। এই নিয়ে দুই দিনে গুহা থেকে আট কিশোরকে উদ্ধার করা হলো। এর আগে রোববার প্রথম দফায় অভিযান চালিয়ে গুহা থেকে চার কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। তবে চারজনকে উদ্ধারের পর এয়ার ট্যাঙ্ক পরিবর্তনের প্রয়োজন দেখা দেওয়ায় রাতে অভিযান স্থগিত রাখা হয়। রোববার বাকিদের উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়। এদিকে আগের দিন রোববার উদ্ধাররা বিপদমুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। গতকাল সকালে তাদের ক্ষুধা পেলে ভাত এবং মাংস দেওয়া হয়। তবে সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে তারা এখনো তাদের পরিবারের কাউকে দেখতে পারেনি। মেডিকেল রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কেউ তাদের স্পর্শও করতে পারবে না।

খুদে ফুটবলারদের উদ্ধারকারীদের প্রধান সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, গুহা থেকে উদ্ধার করা ওই তিন কিশোর দুর্বল হয়ে পড়েছিল। এখন তারা বল পেয়েছে এবং নিরাপদে আছে। খাবারও দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের বাবা-মা এবং পরিবারের সদস্যরা এখনো কাছে যেতে পারেননি। মেডিকেল রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে কেউ তাদের স্পর্শ করলে কোনো সমস্যা হবে কি না। আপাতত নানা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।

কিশোরদের চিকিৎসকরা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে তাদের খাবার দেওয়ার ব্যাপারে। কারণ, অনেক দিন গুহায় ক্ষুধার্ত থেকে তারা রোগা হয়ে গেছে। আর আমরা মেডিকেল রিপোর্ট পেলেই তাদের বাবা-মার সঙ্গে দেখা করিয়ে দেব। এর আগে দেখা করলে সংক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

থাইল্যান্ডের উত্তরে চিয়াং রাই এলাকার থাম লুয়াং গুহায় বেড়াতে গিয়ে গত ২৩ জুন নিখোঁজ হয় দেশটির ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচ। একটি প্রশিক্ষণ পর্বে অংশ নেওয়ার পর তারা ওই গুহার ভেতর প্রবেশ করে। এরপর শুরু হয় টানা ভারী বর্ষণ। বর্ষার পানি আর কাদায় বন্ধ হয়ে যায় গুহার প্রবেশমুখ। ভেতরে আটকা পড়ে ১৩ জনের দলটি। ঘটনা জানার পরপরই উদ্ধার অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। শুরুতেই গুহার প্রবেশমুখে ওই কিশোরদের বাইসাইকেল খুঁজে পাওয়া যায়। গুহার ভেতরে পাওয়া যায় তাদের হাত-পায়ের ছাপ।

এরপর থেকে পুরো থাইল্যান্ডের মানুষের তাকিয়ে আছে গুহাটির দিকে। দেশটির নৌবাহিনীর সঙ্গে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় যুক্তরাজ্য থেকে যাওয়া ডুবুরি দল। গুহায় যাতে অক্সিজেনের ঘাটতি না হয়, সেজন্য প্রবেশ করানো হয় কয়েক শ’ অক্সিজেন ট্যাংক। গুহার ভেতরে তৈরি করা হয় একটি বেস ক্যাম্প। প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়াসহ নানাভাবে নিখোঁজ কিশোরদের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চললেও ভারী বর্ষণ উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছিল। এতে করে আটকে পড়া দলটিকে ফিরে পাওয়ার আশা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কিন্তু উদ্ধারকারীরা দমে যাননি। চালিয়ে যান অভিযান।

আটকে পড়ার ৯ দিনের মাথায় সন্ধান মেলে দলটির। ব্রিটিশ উদ্ধারকারী ডুবুরি দল জানায়, কিশোর ফুটবল দলটি ওই গুহার মধ্যে একটি শুকনো কার্নিশের মতো জায়গায় বসে আছে।

আটকা পড়া কিশোরদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে আর তাদের কোচ এক্কাপোল জানথাওংয়ের বয়স ২৫। তারা যে গুহায় আটকে পড়েছে সেটি ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এটি থাইল্যান্ডের দীর্ঘতম গুহা। কম প্রশস্ত ও অনেকগুলো প্রকোষ্ঠ থাকায় এর ভেতর চলাচল করা কঠিন। এর আগে গত শুক্রবার গুহায় আটকে পড়া কিশোরদের কাছে অক্সিজেন সরবরাহ করে ফেরার পথে অক্সিজেন ঘাটতির কারণে এক ডুবুরির মৃত্যু হয়, যিনি থাইল্যান্ড নেভির একজন সাবেক সদস্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist