প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
দিনাজপুর বকশীগঞ্জে বন্যার আশঙ্কা : উন্নতি কুড়িগ্রামে
পুনর্ভবা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় দিনাজপুরে ফের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদ, দশানী নদী, জিঞ্জিরাম নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে জামালপুরের বকশীগঞ্জের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এদিকে ধরলার পানি কমতে থাকায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-
দিনাজপুর : দিনাজপুরে পুনর্ভবা (কাঞ্চন) নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। শহরের হঠাৎপাড়া এবং বালুয়াডাঙ্গা এবং চককাঞ্চন এলাকার কিছু বাড়িতে ঢুকে গেছে বন্যার পানি। আতঙ্কিত মানুষজন তাদের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন। সরেজমিনে জানা যায়, জনসাধারণ ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় মালামাল নিয়ে জড়ো হচ্ছেন। কিছু কিছু বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ায় আশপাশের এলাকায় বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে। হঠাৎ করে পানি বেড়ে যাওয়ায় সুইস গেট দিয়েও নিয়ন্ত্রণে আসছে না বন্যার পানি।
পানিবন্দি লাইলী বলেন, ইন্ডিয়া আবারও পানি ছেড়েছে। আমার বাড়ি-ঘর পানিতে ডুবে গেছে। কিছু মালামাল নিয়ে রাস্তায় এসেছি। সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। গাবুড়া ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানকার আশেপাশের কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। অনেকে মনে করছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিনাজপুর শহরে বন্যার পানি প্রবেশ করতে পারে।
কুড়িগ্রাম : ধরলা নদীর পানি কমতে শুরু করায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গত শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ৪১ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে কুড়িগ্রাম সদর ও ফুলবাড়ী উপজেলায় ধরলা অববাহিকা ও চরাঞ্চলের ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে যাচ্ছে, তবে নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নেমে যায়নি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সারডোব এলাকার মোকছেন আলী জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় আমরা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছি। সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওমর আলী জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় চার হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন জানান, বন্যাকবলিত এলাকার চেয়ারম্যানদের নিকট থেকে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় পানি ঢুকে পড়ছে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চলগুলোতে।
স্থানী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানায়, গত ২৪ ঘণ্টার সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ৪১ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) : জামালপুরের বকশীগঞ্জে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকায় দুর্ভোগের আশঙ্কা করছে মানুষ। জানা গেছে, উজানের পানিতে ব্রহ্মপুত্র নদ, দশানী নদী, জিঞ্জিরাম নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চর গাজীর পাড়া গ্রাম, গাজীর পাড়া, উত্তর আচ্চাকান্দি, নিলেরচর, কতুবের চর, শেকপাড়া, মদনের চর গ্রাম, মেরুর চর ইউনিয়নের মাদারের চর, ভাটি কলকিহারা, উজান কলকিহারা, বাগাডোবা গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
"