রাজশাহী ব্যুরো
চোরাই সিগারেটে সয়লাব রাজশাহী
রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
অবৈধ পথে আসা বিদেশি সিগারেটে ছেয়ে গেছে সীমান্তঘেঁষা শহর রাজশাহী। নিকোটিনের পরিমাণ কম বলে বিক্রি করা চোরাই পথে আসা এসব সিগারেটের কারণে উঠতি বয়সের তরুণরা নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন। এই চোরাই সিগারেটের কারণে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। নগরে জমজমাট আড্ডায় প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর বসেই চলছে এসব বিদেশি সিগারেটের অবৈধ ব্যবসা।
নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ের এক সিগারেট বিক্রেতা জানান, ‘বর্তমানে স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা বিদেশি সিগারেট বেশি করে কিনছে আর এগুলোতে নিকোটিনের পরিমাণ কম থাকে এমন প্রচারণা থাকায় দাম বেশি হলেও কিনছে সবাই। তবে এসব সিগারেট বৈধভাবে বাজারজাত হচ্ছে কি না, জানেন না তিনি।
নগরীর গণকপাড়া, সাহেব বাজার মুড়িপট্টি, সোনাদীঘির মোড়, লক্ষ্মীপুর, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিদেশি সিগারেটে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। এসব সিগারেটে ক্ষতি কম ও স্বাস্থ্যকর ইত্যাদি মিথ্যা প্রচারণা করে তা ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নতুন ধূমপায়ী তৈরি করতে মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে অস্থায়ী নিয়োগের ভিত্তিতে কাজ করছেন কলেজ ছাত্ররা। বাদ যায়নি ছাত্রীরাও। অল্প বয়সীরা ফ্যাশন হিসেবে এসব সিগারেটে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। আবার অনেকে দীর্ঘদিনের পুরাতন ধূমপায়ী, হৃদরোগসহ শারীরিক বিভিন্ন অসুস্থতার কারণে তীব্র ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ধূমপান ছাড়তে পারছে না। তাদের স্বাস্থ্যের কম ক্ষতি হবে এমনটি ভেবে অভ্যস্ত হচ্ছেন বিদেশি সিগারেটে।
মহানগরীর গণকপাড়া, সাহেব বাজার, মুড়িপট্টি, আরডিএ, সোনাদীঘির মোড়সহ আশাপাশের এলাকার বেশ কিছু পাইকারি দোকানে বিদেশি সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। সেখান থেকে চলে যাচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে আর আইনের প্রয়োগ না থাকায় অধিক মুনাফার আশায় দ্রুতগতিতে প্রসার ঘটছে বিদেশি চোরাই সিগারেট ব্যবসার। সিগারেটের প্রতি শলাকায় ২ থেকে ৫ টাকার বেশি লাভ হওয়ায় খুচরা ব্যবসায়ীরা এ সিগারেট বিক্রিতে বেশ আগ্রহী।
রাজশাহীতে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) প্রকল্প সমন্বয়ক এহসানুল আমিন ইমন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, এমনিতেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনেকটাই দুর্বল, তারপরও যতটুকু আছে তারও নেই প্রয়োগ। যে কারণেই অবৈধ পথে আসা বিদেশি সিগারেট বাণিজ্য বন্ধ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি কোনো সিগারেটের প্যাকেটে উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকে না, লাগে না বিএসটিআইয়ের অনুমোদন। এ কারণে এ ব্যবসায় বিনিয়োগকারীদের লোকসানের ভয় থাকে না। আইনের প্রায়োগিক দুর্বলতায় এ ধরনের অবৈধ নেশাদ্রব্য প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। এতে তরুণ-তরুণীরা ধূমপানে আসক্ত হচ্ছেন।
"