কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
শোলাকিয়া মাঠের নিরাপত্তায় ৩ ড্রোন
নিরাপত্তা পরিকল্পনাকে আরো নিñিদ্র করতে এবার প্রথমবারের মতো যুক্ত করা হয়েছে ড্রোন। নিরবচ্ছিন্ন নজরদারির জন্য তিনটি ড্রোন উড়বে শোলাকিয়ায় মাঠে। এতে ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ। পুলিশ সুপার জানান, মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এক মাস ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (র্যাব) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুরো ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকা ১০টি সেক্টরে ভাগ করে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, সহস্রাধিক পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিñিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তাবলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করবেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
এ ছাড়া মাঠের প্রবেশ পথগুলোসহ আশপাশের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা থাকবে সিসি ক্যামেরার আওতায় এবং ২৪টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হবে। মাঠে স্থাপন করা হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। ঈদগাহ অভিমুখী সব সড়কে বসানো হবে নিরাপত্তাচৌকি।
ঈদগাহ ময়দানের প্রবেশ পথে স্থাপিত আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিদের ঢুকতে হবে বলেও জানান মো. মাশকুরুর রহমান খালেদ। এর আগে আরো অন্তত তিন দফা মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মুসল্লিদের দেহ তল্লাশি করা হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ঈদগাহে আগত মুসল্লিদের কেবল পাতলা জায়নামাজ ও ছাতা ছাড়া কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। নিরাপত্তার পাশাপাশি দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত মুসল্লিদের কাছে নির্বিঘœ করতে জেলা প্রশাসন, ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি ও পৌরসভাসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, এরই মধ্যে মাঠে দাগ কাটা, বালু ফেলা, দেয়ালে রং করাসহ শোলাকিয়া ময়দানকে জামাতের উপযোগী করার কাজ শেষ হয়েছে। মুসল্লিদের চলাফেরা নির্বিঘœ করতে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা নির্মাণ করেছে কয়েকটি নতুন রাস্তা ও একটি সেতু। সংস্কার করা হয়েছে ওজুখানা ও টয়লেট। চলছে শহরের শোভাবর্ধনের কাজও। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিকেল টিম।
দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এবারও শোলাকিয়ায় লাখো মানুষের ঢল নামবে বলে আশা করছে জেলা প্রশাসনসহ স্থানীয়রা।
২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন সকালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিমুদ্দিন স্কুলের পাশে পুলিশ সদস্যদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ হামলায় পুলিশের দুই সদস্য, এক জঙ্গি ও বাড়ির ভেতরে থাকা এক গৃহবধূসহ চারজন নিহত হন এবং আট পুলিশসহ তিন পথচারী গুরুতর আহত হন।
"