হাসান ইমন
নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল
সরবরাহ প্রচুর থাকায় স্থিতিশীল রয়েছে নিত্যপণ্যের বাজার। তবে এই স্থিতিশীল দাম হলো আগের বাড়তি দাম। এ কারণে রোজার আগে বেড়ে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি পণ্য। তবে গেল সপ্তাহে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি না হলেও গতকাল শুক্রবার মাংস বিক্রি হয়েছে সিটি করপোরেশেনের নির্ধারিত দামে। গতকাল শুক্রবার মহাখালী কাঁচাবাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এই তথ্য জানা গেছে।
বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে দুই সিটি করপোরেশন, র্যাব, পুলিশ, ভোক্তা অধিকারসহ সরকারি কয়েকটি সংস্থা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। এ ছাড়া সরবরাহ বাড়ায় কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। তবে সরকার ইচ্ছা করলে নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখতে পারত বলে মনে করেন ক্রেতারা। তারা বলেন, গত কয়েক দিন নগরীর বিভিন্ন বাজারে মনিটিরং টিম যে অভিযান চালিয়েছে, তা রোজার আগে হলে ভালো হতো।
এ বিষয়ে মহাখালী কাঁচাবাজারে কথা হয় ব্যাংক কর্মকর্তা আহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম একটু বাড়তিই মনে হচ্ছে। অন্য ক্রেতা সরকারি কর্মকর্তা জুঁই বলেন, আগেই দাম বাড়িয়ে রাখলে রোজায় আর নতুন করে দাম বাড়ানোর দরকার কী? যা লাভ করার এখন থেকেই করা হচ্ছে। তাই দায়িত্বশীলদের উচিত ছিল রোজার আগে বাজার মনিটরিং করে দাম স্থিতিশীল রাখা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে সিটি করপোরেশন নির্ধারিত দামে। প্রতি কেজি দেশি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা, বিদেশি (বোল্ডার) ৪২০ ও খাসির মাংস ৭২০ টাকা। যদিও রোজার আগে থেকে শুরু করে রোজার প্রথম দিন পর্যন্ত গরুর মাংস ৫০০ টাকা কেজি ও খাসির ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার বলেন, পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অভিযান চলছে। রমজান মাসজুড়ে অভিযান চলবে। খাদ্যে ভেজাল মেশালে ও অতিরিক্ত দাম রাখলে কোনো ব্যবসায়ীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি জানান, বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে খাদ্যে ভেজাল ও অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা এবং কয়েকজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। এদিকে, অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়তি থাকলেও গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের। গতকাল পেঁয়াজ (বিদেশি) বিক্রি হয় ২৮-৩০ টাকা কেজি। আর দেশি পেঁয়াজ ৩৮-৪০ টাকায়; যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৪৫ টাকা। এ ছাড়া ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৯০ টাকা কেজি, চিনি ৬০-৬২, মুড়ি ৭০-১২০, রসুন মানভেদে ১০০-১২০, খেসারির ডাল ৬০ ও মসুর ১০০-১৪০ টাকা।
কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ৮০ টাকা কেজি বেগুন গতকালও একই দামে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ঝিঙা ৭০ টাকা, পটোল ৬০, করলা ৬০, চিচিঙ্গা ৬০, পেঁপে ৬০, ঢেঁড়স ৬০ ও কাঁচামরিচ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাড়তি দামের উত্তাপ রয়েছে শাকের বাজারেও। লালশাক, সবুজ ডাঁটা শাক, পাটশাক, কলমি শাক বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকা আঁটি, পুঁইশাক ও লাউশাক ৩০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে।
মাছের দামও বাড়তি বলে জানান মাছ বিক্রেতারা। বাজারে ৫০০ গ্রাম ওজনের এক হালি ইলিশের দাম এক হাজার ৬০০ টাকা, আর ৩৫০ গ্রাম ওজনের এক হালি ইলিশ চাওয়া হচ্ছে এক হাজার টাকা। এ ছাড়া বড় সাইজের তাজা দেশি রুই কেজিপ্রতি ৩৫০ টাকা, একটু ছোট ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩ থেকে ৫ কেজি ওজনের কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। চিংড়ি মাছ বড় ৫০০ টাকা, বাগদা ৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, নাজিরশাইল চাল ৬৬, মিনিকেট (মানভেদে) ৬৩ থেকে ৬৬, পাইজাম ৬৬, বিআর-২৮ ৫৩ থেকে ৫৬, স্বর্ণা ও পারিজা ৪৫ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।
রোজায় কার্যকর বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা। কারওয়ান বাজারে কথা হয় ব্যাংক কর্মকর্তা আহাম্মদ হোসেনের
সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম একটু বাড়তিই মনে হচ্ছে। অপর ক্রেতা সরকারি কর্মকর্তা জুঁই বলেন, আগেই দাম বাড়িয়ে রাখলে রোজায় আর নতুন করে দাম বাড়ানোর দরকার কী? যা লাভ করার এখন থেকেই করা হচ্ছে। তাই দায়িত্বশীলদের উচিত কার্যকর বাজার মনিটরিং করে দাম স্থিতিশীল রাখা।
"