খুলনা প্রতিনিধি

  ২৬ মে, ২০১৮

খুলনায় মাদক

কালো তালিকায় কাউন্সিলর ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪১

খুলনা মহানগর ও জেলায় মাদক কারবারিদের পৃষ্ঠপোষকের কালো তালিকায় রয়েছেন কেসিসির দুজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং একাধিক রাজনীতিক ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪১ জন। অভিযোগ রয়েছে, তারা মাদক কারবারি, ডিলার, চোরাকারবারিদের পৃষ্ঠপোষক ও আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে করা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে প্রেরিত সর্বশেষ তালিকায় উল্লিখিত ব্যক্তিদের নাম যুক্ত করা হয়েছে।

খুলনায় মাদকের সঙ্গে জড়িত পাচারকারী, ডিলার, খুচরা বিক্রেতাদের একাধিক কালো তালিকা রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। এ তালিকায় কেসিসির বর্তমান পর্ষদের প্যানেল মেয়র-১ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান বিশ্বাস এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা শামসুজ্জামান মিয়া স্বপন। তবে এ দুজনের বিরুদ্ধে মাদক-সংক্রান্ত কোনো মামলা নেই। যোগাযোগ করা হলে এ অভিযোগ ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন তারা।

গোয়েন্দা সংস্থার ওই তালিকায় রয়েছেন, তেরখাদা উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান এফ এম মহিদুজ্জামান, দিঘলিয়ার বারাকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন, রূপসার ঘাটভোগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাধন অধিকারী, ৫নং আড়ংঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মফিজুর রহমান জিবলু, রূপসার আইচগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিটন ঢালী, জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আজিজুল হক কাজল, দাকোপ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রতন মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এম এ রিয়াজ কচির বড় ভাই এম এ রেজা বাচা, দিঘলিয়ার সেনহাটির ছাত্রলীগ কর্মী মঈনুল ইসলাম জুয়েল, দাকোপের বানিয়াশান্তা বাজারের আজিজ হাওলাদার, চালনা বাজারের আয়নাল হাওলাদার, তেরখাদার কাটেঙ্গা এলাকার মৃত মোকাদ্দেস মোল্লার ছেলে মাসুম মোল্লা, ভাষা ফকিরের ছেলে ওয়াহিদুল ইসলাম ফকির।

একই তালিকায় ১২ জন পুলিশ কর্মকর্তার নাম রয়েছে। এরা হলেনÑ দিঘলিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান, ফুলতলা থানার ওসি আসাদুজ্জামান মুন্সি, রূপসার আইচগাতি ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই জাহিদ হাসান, রূপসা থানার এ এস আই রবিউল ইসলাম, দাকোপ থানার এ এস আই সবুর হোসেন, পাইকগাছা থানার এস আই মমিন, কয়রা থানার এস আই ইকবাল, এস আই আজম, ডুমুরিয়ার মাগুরঘোনা ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই নাহিদ হাসান, এ এস আই রবিউল, বটিয়াঘাটা থানার এস আই শফিকুল ইসলাম শফিক ও দিঘলিয়া থানার এস আই মধুসুদন পান্ডে।

খুলনা নগরীতে তালিকাভুক্ত অন্যরা হলেনÑ ২১নং ওয়ার্ডের ৫নং মাছঘাট এলাকার ঘাট শ্রমিক লীগের সহসভাপতি মো. বাবুল শেখ, একই ওয়ার্ডের জোড়াগেট কাঁচা বাজারের পেছনের আয়ুব আলী মোড়লের ছেলে মো. সামছু, হাসপাতাল রোডের মৃত কাশেম মুন্সির ছেলে নগর শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গদা ইউনুচ মুন্সি, ৪নং ফুডঘাট এলাকার ১৩৮ খাদ্যগুদাম ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. ভাষান, ২১নং ওয়ার্ড আ.লীগের সহসভাপতি মো. সেলিম মুন্সি, দৌলতপুরের দেয়ানা এলাকার মোয়াজ্জেম পেয়াদার ছেলে আরাফাত সানি সোহাগ, দৌলতপুর কালিবাড়ী মহেশ্বরপাশা এলাকার কামরুল মাতব্বর, বিএল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রাকিব মোড়ল, ৭নং ওয়ার্ড আ.লীগের সহসভাপতি শেখ খালিদ হোসেন, ২নং ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এফ এম জাহিদ হাসান জাকির, খানজাহান আলী থানা মোটর শ্রমিক লীগের সদস্য বাদশা মিয়া, খানজাহান আলী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হেলাল শরীফ, আড়ংঘাটার গাইকুড় এলাকার মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক শেখ, আড়ংঘাটা উত্তরপাড়া এলাকার মৃত ডা. রহিম মোড়লের ছেলে মো. কাওছার মোড়ল।

র‌্যাব-৬-এর পরিচালক খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, খুলনায় মাদকের সঙ্গে জড়িত পাচারকারী, ডিলার, খুচরা বিক্রেতাদের একাধিক তালিকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে রয়েছে। তাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। মাদকের সঙ্গে জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান আরো জোরালো করা হচ্ছে। র‌্যাবের অভিযান চলবে।

উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী মহানগরীসহ খুলনা জেলায় তালিকাভুক্ত মাদক চোরাকারবারি রয়েছে ৩৩৪ জন। এ ছাড়া মাদক কারবারের গডফাদার বা পৃষ্ঠপোষক রয়েছেন ১৩ জন। এসব মাদক বণিক ও গডফাদার খুবই প্রভাবশালী। যে কারণে অধিকাংশই এখনো রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist