সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

  ২৩ মে, ২০১৮

ক্ষতস্থানে পচন

যন্ত্রণায় কাতর মুক্তামণি

রক্তনালিতে টিউমারে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামণি এখন তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণায় নির্জীব হয়ে পড়ছে। টানা ছয় মাসের উন্নত চিকিৎসায় যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস গড়া সেই মুক্তামণির ক্ষতস্থানে এখন নতুন করে পচন ধরেছে। রোগ সারা দেহে ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্ত ডান হাত থেকে বেরিয়ে আসছে ছোট-বড় পোকা আর রক্ত। তীব্র যন্ত্রণায় মুক্তামণি এখন কাতর।

দিনরাত শয্যাশায়ী মুক্তামণি জানায়, তার দেহে কোনো শক্তি নেই। সব চিকিৎসা ব্যর্থ হয়েছে। এখন তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণায় ভুগছে। ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরে। পোকা বের হয়। বিকট দুর্গন্ধে কেউ কাছে থাকতে পারে না। মুক্তামণি জানায়, একমাত্র আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।

মুক্তামণির বাবা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহিম হোসেন জানান, দেশের অনেক ডাক্তার ও হাসপাতালে মেয়ের চিকিৎসা করিয়ে কোনা লাভ হয়নি। অবশেষে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো মুক্তার করুণ চিত্র তুলে ধরে। পরে সরকারি উদ্যোগে তার মেয়েকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে।

সেখানকার ডাক্তাররা বায়োপসি করে জানান, মুক্তামণির রক্তনালিতে টিউমার রয়েছে। পরে তাকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেখার পর সিঙ্গাপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুক্তার চিকিৎসায় তাদের অস্বীকৃতির কথা জানিয়ে দেয়।

তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি সরকারি খরচে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। গত ২০১৭ সালের ১০ জুলাই তাকে ঢাকায় ভর্তি করার পর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও ডা. সামন্তলাল সেনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম ছয় মাস ধরে তার চিকিৎসা দেয়। এ সময় তার দেহে কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসায় তার স্বাস্থ্যের আশানুরূপ উন্নতি হয়।

এদিকে ঢাকায় টানা ছয় মাস চিকিৎসা শেষে এক মাসের ছুটিতে মুক্তামণি ২০১৭-এর ২২ ডিসেম্বর বাড়ি ফিরে আসে। এরপর থেকে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা চলতে থাকে। এরই মধ্যে তার অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছে।

তার বাবা-মা এমনকি মুক্তামণি নিজেই এখন হতাশ। সব ধরনের ওষুধ খাওয়াও বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিদিন একবার করে ড্রেসিং করতে হয়। এখন মুক্তামণি দাঁড়াতে পারে না। দেশ-বিদেশের বহু মানুষ ও প্রতিষ্ঠান তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা তার রোগমুক্তি কামনা করেছেন। মুক্তামণির মা আসমা খাতুন জানান, ডাক্তার বলেছেন ঈদের পর ঢাকায় নিয়ে যেতে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist