নিজস্ব প্রতিবেদক
ভেজাল পানির কারখানা সিলগালা ৩ জনকে জেল-জরিমানা
নকল মোড়কে সেমাই
বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই ভেতরে পানি প্রক্রিয়াজাত কারখানা। ভেতরে ঢুকতেই সবার চোখ রীতিমতো কপালে ওঠার দশা। পানি পরিশোধনের জন্য নেই কোনো ব্যবস্থা, নেই ল্যাব বা কোনো কেমিস্টও। ওয়াসার পাইপ থেকে সংগ্রহে রাখা ট্যাঙ্কি থেকে পানি সরাসরি ভরা হচ্ছে জারে। রাজধানীর নতুনবাজার প্রগতি সরণি থেকে অনেকটা ভেতরে ভাটারা ছোলমাইদ হাতিবাড়িতে গড়ে তোলা হয়েছে পানির প্রক্রিয়াজাতের কারখানা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে পৌনে ২টা পর্যন্ত ভাটারা ও গুলশান থানা পুলিশ এবং বিএসটিআইর সহযোগিতায় ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। ক্রিস্টাল ফুড অ্যান্ড বেভারেজ নামের প্রতিষ্ঠানটিকে দুই মাস আগেও অপরিচ্ছন্নতার কারণে এক লাখ টাকা জরিমানা ও সতর্ক করেছিল বিএসটিআই। মাত্র ৬০ দিনের মাথায় গতকাল মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে আবারও দেড় লাখ টাকা জরিমানা করে ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জানা যায়, ওয়াসার পানি নিচের ট্যাঙ্কি থেকে মেশিনের মাধ্যমে তুলে তা সরাসরি জারে ভরা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিএসটিআই আইন ও ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনের কোনো সদুত্তরও দিতে পারেননি প্রতিষ্ঠানটির মালিক রফিকুল ইসলাম।
ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান বলেন, পানির প্রক্রিয়াজাত মানসম্মত না। পানি সরবরাহে বিএসটিআই লোগো ব্যবহার করছে না প্রতিষ্ঠানটি। কেমিস্ট নেই, ল্যাবও নাই। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই পানি সরাসরি ট্যাঙ্কিতে যাচ্ছে। পরে মাসুম, রিপন ও আলামিন নামে তিন কর্মচারীকে আটক ও প্রতিষ্ঠানটিকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা ও সিলগালা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তিন কর্মচারীকে তিন মাসের জেল দেওয়া হয়।
বিএসটিআইর ফিল্ড অফিসার নোভেরা বিনতে নুর বলেন, এর আগে অসঙ্গতি থাকায় ও বিএসটিআই আইন অমান্য করায় প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানাসহ সতর্ক করা হয়েছিল। এবার জরিমানার পাশাপাশি সিলগালা করা হলো। পানি পরীক্ষার জন্য তিনটি পানির জার বিএসটিআই ল্যাবে নেওয়া হচ্ছে। পানি অপরিশোধিত ও জীবাণুযুক্ত হলে প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্সও বাতিল করা হবে।
নকল মোড়কে সেমাই, ৪ লাখ টাকা জরিমানা : অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সেমাই উৎপাদন, নকল মোড়কে বাজারজাতকরণের অভিযোগে তিনটি সেমাই ও বেকারি প্রতিষ্ঠানকে চার লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল মঙ্গলবার কামরাঙ্গিরচর এলাকার কয়েকটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয় প্রায় এক লাখ টাকা মূল্যের ভেজাল সেমাই। এ সময় প্রতিষ্ঠানের মালিকদের ব্যবসা পরিচালনার বৈধ কাগজপত্র দাখিল করতে দুই দিনের নোটিস দেওয়া হয়। অন্যথায় কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় কথা জানান, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
তারা বলেন, ঈদকে সামনে রেখে পুরোদমে সেমাই উৎপাদন শুরু করেছে এসব প্রতিষ্ঠান। এই সুযোগে অস্বাস্থ্যকর কোনো সেমাই যেন বাজারে পৌঁছাতে না পারে, সেজন্য তারা এই অভিযান পরিচালনা করছেন।
"