প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৩ মে, ২০১৮

ফিলিস্তিনে জ্বলে ওঠা কিশোরী

ফিলিস্তিনি কিশোরী উইসেল শেখ খালিল। বয়স ১৪। শান্ত স্বভারের এই কিশোরী রাস্তায় এক্কাদোক্কা খেলে বেড়াত। অঙ্ক আর নাচে দখল ছিল। ভালো ছবিও আঁকত। ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ পৃথিবী নিয়েও যার ছিল না ন্যূনতম জ্ঞান। সেই শান্ত কিশোরীই হঠাৎ করে ক্ষোভে ফেটে পড়ল। শামিল হলো ইসরাইলের নিপীড়নবিরোধী মিছিলে। যা তাকে ইসরাইলি সেনাদের নির্বিচার গুলিতে নিহতদের কাতারে শামিল করেছে। এই কিশোরীর স্মৃতিই এখন ফিলিস্তিনে ইসরাইলি নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জ¦লে ওঠার অগ্নিশিখা।

উপকূলীয় অঞ্চলে দারিদ্র্যের সর্বনিম্ন সীমার মধ্যে বাস করছে উইসেলের পরিবার। রাজনীতির সঙ্গে তাদের কোনো সংযোগ ছিল না। একসময় ইহুদিবাদী বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে ছোট্ট উইসেলের মন।

গত সোমবার সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে ১১ বছরের ছোট ভাইকে নিয়ে বিক্ষোভ করতে চলে যায় সে। সেখানে ইসরাইলি সেনাদের গুলি ও কাঁদানে গ্যাস উপেক্ষা করেই একেবারে সীমান্তে পৌঁছে যায় সে। প্রথমে সে বিক্ষোভকারীদের পানির বোতল এগিয়ে দিচ্ছিল। কিন্তু ইসরাইলি সেনারা দমন-পীড়ন বাড়ালে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এ ফিলিস্তিনি কিশোরী। একেবারে সীমান্ত লাগোয়া জায়গায় হাজির হয় সে। তার মাতৃভূমি ফিলিস্তিনকে দখল করে গড়ে তোলা ইসরাইলের কাঁটাতারের বেড়া কেটে ফেলতে চেষ্টা করে। একপর্যায়ে ইসরাইলি সেনাদের রাইফেলের নিশানায় পরিণত হয় সে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে কিশোরী উইসেল।

গত ৩০ মার্চ থেকে ইসরাইলের দখল করে নেওয়া ঘরবাড়িতে ফিরতে ফিলিস্তিনিদের পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এ কর্মসূচির প্রথম দিনেই একের পর এক ফিলিস্তিনিকে গুলি করে ইসরাইল। তখন ১৮ জন নিহত ও কয়েকশ’ আহত হন। তবে উইসেল শুরু থেকেই এ কর্মসূচিতে যেতে রাজি ছিল না। কিন্তু গত ১৪ মে ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিব থেকে পবিত্র জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরের দিন উইসেল আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে গত ৩০ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত নিহত ১১০ জন। ইসরাইলের অবরোধে গাজা উপত্যকার অর্থনৈতিক অবস্থা চরম দুর্দশায় চলে গেছে।

নিহত হওয়ার আগে সে জানিয়েছিল, এভাবে মুখ বুজে আর ইসরাইলি বর্বরতা মেনে নেবে না সে। অবশ্যই অন্যদের সঙ্গে সীমান্তে গিয়ে বিক্ষোভ করবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভে যোগ দিতে গিয়ে তারা সীমান্তে কালো ধোঁয়ার কু-লীর ভেতর গিয়ে ইসরাইলি নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়। তখনই ইসরাইলি স্নাইপারের গুলিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে উইসেল। এ ঘটনায় তার পুরো পরিবার শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু সান্ত¡নাও খোঁজেন না তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist