প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
প্রথম কলাম
কলকাতায় হকার উচ্ছেদের বিকল্প উদ্যোগ
কলকাতার রাস্তাঘাটে প্রতিবছরই বাড়ছে হকারের সংখ্যা। এই মহানগরের জনপ্রিয় বাজার নিউ মার্কেটের ভেতরের দোকানগুলোতে প্রায় সবকিছু পাওয়া গেলেও সেসবের অনেক কিছুই কেনা যায় নিউ মার্কেটের ভেতরে না গিয়েই। কারণ নিউ মার্কেটের বাইরে রাস্তায় আর ফুটপাতে অসংখ্য অবৈধ হকার কম দামে বিক্রি করেন একই জিনিস। এই হকারদের জন্য লেকে ভাসমান বাজার বসানো হয়েছে। এ রকম আরো উদ্যোগের কথা ভাবা হচ্ছে। খবর অনন্দবাজার পত্রিকা।
কলকাতার রাস্তাঘাট হকার মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করেন বনানী কাকার। তিনি জানান কলকাতার রাস্তায় অবৈধ হকারদের দৌরাত্ম্য দিনদিন বেড়েই চলেছে। গত ১০ বছরে এই সমস্যা আরো প্রকট হয়েছে। প্রতিবছর হকারের সংখ্যা বাড়ছে। কাকার মনে করেন হকারদের উপস্থিতি শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। এই হকাররা সরকারকে কোনো কর দেন না। কলকাতার রাস্তাঘাটে এরকম হকারের সংখ্যা আড়াই লাখেরও বেশি। এই হকারদের উৎখাত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন ব্যবসায়ী মুদা পাতেরিয়া। তার মতে, আইন করে হকারদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করলে এই সমস্যা ধীরে ধীরে কমে আসবে।
কলকাতা শহরের পাটুলি এলাকার একটি লেকে একটি ভাসমান বাজার তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ১০০-এর বেশি নৌকায় নানা ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা, যাদের প্রায় সবাই একসময় ছিলেন হকার। প্রতিটি নৌকায় একসঙ্গে দুজন করে হকার তাদের জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারবেন। লটারির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় পরপর কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে যে কারা নৌকায় দোকানি হিসেবে বসার সুযোগ পাবেন।
ভারতীয় হকার্স ফেডারেশনের মতে, দেশটির ৮০ কোটি মানুষ কেনাকাটার জন্য হকারদের ওপর নির্ভরশীল। তবে এখনো ভারতের অধিকাংশ মানুষই তাদের দৈনন্দিন জীবনের কেনাকাটার জন্য হকারদের ওপরই নির্ভরশীল বলে মন্তব্য করেন জাতীয় হকার্স ফেডারেশনের নেতা শক্তিমান ঘোষ। ঘোষ মনে করেন, সদিচ্ছা থাকলে সরকার সহজেই এই হকারদের ব্যবসা চালানো সুযোগ করে দিতে পারবে। পুরনো কলকাতায় যেমন হকারদের ভাসমান বাজারে জায়গা দেওয়া হয়েছে, চাইলে নতুন কলকাতায়ও সেরকম বিকল্প পদ্ধতিতে হকারদের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া সম্ভব । এর জন্য সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকাই যথেষ্ট।
"