আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৪ এপ্রিল, ২০১৮

ফিদেল কাস্ত্রো ছিলেন মার্কিন সাংবাদিক লিজার প্রেমিক

গত শতাব্দীর ষাটের দশকের গোড়ার দিকে এক ফেব্রুয়ারির রাত। হাভানার হোটেল রিভিয়েরার এক সুইটে দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন লিজা হাওয়ার্ড। তরুণী মার্কিন সাংবাদিক। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ মেকআপ মুছে পোশাক পাল্টে শুতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন সময় হঠাৎ হোটেলের ঘরের দরজায় টোকা। লিজা দেখলেন, যার সাক্ষাৎকার নিতে সুদূর আমেরিকা থেকে তিনি হাভানা এসেছেন, সেই ভদ্রলোক তার সামনে। ৩৭ বছরের ফিদেল কাস্ত্রো। কয়েক বছর আগেই বিপ্লব এনে ফিদেল তখন কিউবার শীর্ষ পদে। লিজা সটান বলে বসেছিলেন, ‘আপনি দেশের শাসক হতে পারেন, আমিও গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক। আপনার সাহস হয় কী করে আমায় এতক্ষণ অপেক্ষা করানোর?’

দুজনের আলাপ পর্বের শুরুটা এমনই ছিল। সে রাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে কথা হয়েছিল ফিদেল আর লিজার। মার্ক্সবাদ থেকে শুরু করে কিউবায় রাজনৈতিক বন্দিদের অবস্থা, সব নিয়েই। আমেরিকা যতই শত্রু হোক, সুন্দরী ছিপছিপে মার্কিন সাংবাদিকের প্রেমে পড়তে কিন্তু বেশি সময় লাগেনি ফিদেলের। আরো কয়েকবার কিউবা গিয়েছিলেন লিজা। স্বীকার করেছিলেন তিনিও বিপ্লবী নেতার প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন। এক বিছানায় কাটিয়েছেন অনেক রাতও।

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংগ্রহশালা থেকে সম্প্রতি লিজার হাতে লেখা কিছু ডায়েরি ও নোট প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকেই সামনে এসেছে ফিদেলের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা। তবে এ দুজনের রসায়ন নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে আগেও কম ক্যারিয়ারের শুরুতে টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করতেন লিজা। পরে সংবাদ জগতে আসেন। কেনেডি ও জনসন সরকারের বার্তা ফিদেলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল লিজার ওপর। আবার ফিদেলের বার্তাও হোয়াইট হাউসের কান পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন তিনি। পুরোটাই গোপনে। লিজা লিখেছেন, ‘ফিদেলের সঙ্গে আমার একান্ত মুহূর্তগুলো ছিল দারুণ রোমাঞ্চকর। তবে নেতা কাস্ত্রো আর মানুষ কাস্ত্রো সম্পূর্ণ আলাদা মনে হতো।’ লিজার কথায়, “আমার কাছে উনিই ছিলেন জর্জ বার্নার্ড শ-এর ‘স্পার্ক অব ডিভাইন ফায়ার’। গোটা দুনিয়া যে একনায়কের রূপ ওকে দিয়েছিল, উনি মোটেও তেমন ছিলেন না।” হাভানার হোটেলেই লিজার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন ফিদেল। একবার লিজাকে বলেছিলেন, ‘তুমি আমার জন্য খুব বিপজ্জনক। তোমার মতো একটা মেয়েকে আমি খুব গভীরভাবে ভালোবাসতে পারি।’ শেষ পর্যন্ত কিউবা সরকারের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন লেখার অভিযোগে চাকরি যায় লিজার। বেশি দিন বাঁচেনওনি। ১৯৬৫ সালে অতিরিক্ত মাদক সেবনে মৃত্যু হয় তার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist