আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনায় ৫৭ একর জমি অবৈধভাবে বন্দোবস্ত নেওয়ার অভিযোগ
ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ৫৭ একর জমি বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছে
ভূমি অফিসের সাবেক কর্মচারী (চেইনম্যান) মো. রকিবুল ইসলাম মাতুব্বর অবৈধ পন্থায় নিজের এবং আত্মীয়দের নাম মিলিয়ে ৪১টি নামে ভূমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন। আমতলীর তারিকাটা মৌজায় ২৭ দশমিক ৪০ একর এবং তালতলীর বিভিন্ন মৌজায় ৩০ একর কৃষি (মোট ৫৭ একর ৪০ শতাংশ) জমি বন্দোবস্তের মাধ্যমে দখলে নিয়েছেন তিনি। এই চেইনম্যান বর্তমানে বরিশাল সদর উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নিজের নামে, বাবা, মা, চাচা-চাচি, প্রথম পক্ষের স্ত্রী, ভাই-বেরাদর, শ্বশুর বাড়ির লোকজনসহ নিকট ও দূর সম্পর্কের আত্মীয়-স্বজনদের নামে বন্দোবস্তগুলো নেওয়া হয়েছে।
রকিবুল ইসলাম মাতুব্বর (ইউছুব) এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে এ ব্যাপারে তারিকাটা গ্রামের মো. জাকির হোসেন ইতোমধ্যে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে রকিবুল ইসলাম ইউছুব ৫৭ একর জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন।
বর্তমানে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের ভূমি অফিসে কর্মরত সেই চেইন-ম্যান রকিবুল ইসলাম মাতুব্বর ইউছুফের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, ভূমি বন্দোবস্ত নেওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি জানান, চাকরিতে যোগদানের আগেই তিনি বন্দোবস্ত নিয়েছেন। তার মায়ের নামে কৃষি জমি না থাকায় তাকে ভূমিহীন দেখিয়ে মায়ের নামে জমি বন্দোবস্ত নেওয়ায় কোনো অনিয়ম নেই। বাকিগুলোর ক্ষেত্রেও তাই।
আলাপকালে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ইউছুব মাতুব্বরের পরিবার কখনোই ভূমিহীন ছিল না। তবে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চাকরিতে যোগদান করার পর মাত্র ৫ বছরে রকিবুল ইসলাম ইউছুব মাতুব্বর প্রচুর জমি-জমা, ব্যাংক-ব্যালেন্স, ৬ তলা ফাউন্ডেশনের বিশাল আয়তনের পাকা বাড়িসহ বিপুল বৃত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন।
আমতলীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলেশ মজুমদার জানিয়েছেন, ১০ শতাংশের কম জমি থাকলে সে ভূমিহীন বলে বিবেচিত হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ বন্দোবস্ত স্বামী-স্ত্রী মিলে পেয়ে থাকে। যেকোনো একজনের ১০ শতাংশের বেশি জমি থাকলে তারা বন্দোবস্তের সুযোগ পাবে না। আমতলীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা খাসজমি বন্দোবস্ত কমিটির সভাপতি মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি তিনি আগে শোনেননি। অভিযোগ পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"