বেনাপোল প্রতিনিধি
সংসদীয় কমিটির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়
যশোর রোডে গাছ কেটে সড়ক চওড়া করার দাবি
বেনাপোল ও যশোরের নাগরিক সমাজ গাছ রক্ষা নয়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কটি ৬ লেন দেখতে চায়। সময়ের প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলেই সড়কটি অধিকতর প্রশস্ত করার ব্যাপারে জোরালো দাবি ওই নাগরিক সমাজের। এই দাবির প্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার দুপুরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বেনাপোল-যশোর মহাসড়ক সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরে তারা বেনাপোল পর্যটন মোটেলে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনসহ নাগরিক সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক এমপির নেতৃত্বে এ কে এম এ আওয়াল এমপি, নাজমুল হক প্রধান এমপি, মনিরুল ইসলাম এমপি ও শেখ আফিল উদ্দিন এমপিসহ সড়ক সচিব ফজলুল ইসলাম সভায় উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক অধিকার আন্দোলন, যশোর-এর উদ্যোগে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন, সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা, আলহাজ নুরুজ্জামান, আলহাজ নাসির উদ্দিন, এনামুল হক মকুল, ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের বন্দর সাব-কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, বেনাপোল প্রেস ক্লাব সভাপতি মহসিন মিলন প্রমুখ। এ সময় সংসদীয় উপ-কমিটির সভাপতি রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক বলেন, যারা উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। এটা স্বাধীনতার মাস। দ্রুত এ মহাসড়কের কাজ শুরু হবে। এ সড়কটি ৮ লেনের মাস্টার প্ল্যান করে ৬ লেনে উন্নীত করা হবে। এ সড়ক নির্মাণের পর দুপাশ দিয়ে বনায়ন করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় গাছ রেখে সড়ক প্রশস্ত করলে শ শ একর কৃষি জমি নষ্ট, কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব ও ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলেও মত প্রকাশ করা হয়। এছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও ঐতিহ্য স্মারক বৃক্ষ রক্ষার দাবিতে দেওয়া আইনি নোটিস এবং হাইকোর্টে দাখিল করা রিটটিও তুলে নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। এর আগে সকালের দিকে বেনাপোল বন্দর এলাকায় বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠন সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন, বেনাপোল প্রেস ক্লাব, ও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক মানের স্থলবন্দর হওয়ায় এখানে আমদানি-রফতানি অন্য সব বন্দর থেকে কয়েকগুণ বেশি। যে কারণে এই সড়কটিতে যানবাহনের ব্যাপক চাপ থাকে। প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহন যাতায়াত করে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অতীব প্রয়োজনীয় এই সড়কটি সম্প্রসারণ করা ছাড়া বিকল্প নেই বলে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে মতামত উঠে আসার পর জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্প অনুমোদন হয়।
অর্থনৈতিক বিবেচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য গত বছর ৩২৯ কোটি টাকা বরাদ্দে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সড়কের দুপাশের গাছ কেটে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়। ২৪ ফিট প্রস্থের রাস্তাটি ৪০.৩৫ ফিট চাওড়া করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। প্রকল্প পাসও হয়। কাজ শুরুর সময় গাছ কাটার পক্ষে-বিপক্ষে মতামত তৈরি হয় যশোরে। গত ১৮ জানুয়ারি উচ্চ আদালত ৬ মাসের জন্য গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশনা দেন। ফলে ওই সড়ক সম্প্রসারণ কাজ ঝুলে যায়। এরপর সরকারকে জনস্বার্থে দ্রুততম সময়ে সড়কটি প্রশস্ত করার তাগিদ দিয়ে মাঠে আরো জোরেশোরে নামেন নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের নেতৃবৃন্দ।
"