নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২২ মার্চ, ২০১৮

১৩৬ পদের মধ্যে ৬৭ পদ শূন্য

জনবলের অভাবে বিঘ্নিত আড়াইহাজারে স্বাস্থ্যসেবা

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবলের অভাবে বিঘিœত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে স্বাস্থ্যসেবা। সেখানে ১৩৬টি পদের মধ্যে ৬৭টি পদ শূন্য আছে বদলি ও অবসরজনিত কারণে। জনবল সংকট আরো তীব্র হচ্ছে বিভিন্ন ছুটি ও সংযুক্তির কারণে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১০ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন মাত্র পাঁচজন। বাকি পাঁচজনের মধ্যে তিনজন চিকিৎসকের পদ শূন্য। মেডিক্যাল অফিসার ডা. মেহেরুন রহমান মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. রিয়াজ মাহমুদ হুদা রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে সংযুক্তিতে রয়েছেন।

এদিকে, ব্রাহ্মন্দী উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মুহাম্মদ আবদুস সালাম নারায়ণগঞ্জ পুলিশ হাসপাতালে, আড়াইহাজার ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা. নুর ফাতেমা নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে, সদাসদি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. তানজিলা সোবহান শিলা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং খাগকান্দা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সারথী রাণী রায় মাতুয়াইল মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে সংযুক্তি নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এসব উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসক না থাকায় স্থানীয়রা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া নার্সিং সুপারভাইজার একটি, সিনিয়র স্টাফ চারটি, মিডওয়াইড চারটি, সহ-সেবক একটি, অফিস সহকারী তিনটি, পরিসংখ্যানবিদ একটি, ভা-ার রক্ষক একটি, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট একটি, স্বাস্থ্য সহকারী ৬০ জনের মধ্যে ২২টি, ফার্মাসিস্ট একটি, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার একটি, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ফার্মাসিস্ট) একটি এবং চতুর্থ শ্রেণির ৩২ জনের মধ্যে ২৪টি পদসহ নৈশপ্রহরী, দারোয়ান ও ওয়ার্ডবয়ের পদ শূন্য রয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশাসন সংশ্লিষ্ট এসব পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ চিকিৎসা বঞ্চনার দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ইনডোরে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভর্তি থাকছেন। মাঝেমধ্যে এ সংখ্যা বাড়ছে। আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছেন অন্তত ৫০০ রোগী। চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকটে তাদের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক রোগী চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এই সুযোগে উপজেলায় যত্রতত্র গড়ে উঠেছে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নামমাত্র চিকিৎসক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে রোগীদের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এসবে ত্যক্ত-বিরক্ত রোগীদের অনেকে আবার পাড়ি জমাচ্ছেন শহরে। চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারগুলোতেও ভিড় বাড়ছে রোগীদের।

এদিকে নিরাপত্তা প্রহরীর দুটি পদই শূন্য থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতর রাতে বসছে মাদকসেবীদের আখড়া। গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে হাসপাতালের ডরমেটরির কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে এক নার্সের স্বামীর একটি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পর থেকে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। অভিযোগ উঠেছে, ইনডোরে চিকিৎসাধীন নারী রোগীদের অনেকেই রাতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। আবাসিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও রাতে বের হতে সাহস পান না।

ওই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. হাবিব ইসমাইল ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে। কিন্তু পদ পূরণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এর মধ্যেই রোগীদের সেবাদানের কাজ করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. এহসানুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংযুক্তির স্থানে চিকিৎসক নিয়োগ হলে নিয়মমাফিক সংযুক্তি বাতিল হবে। এই মুহূর্তে সংযুক্তি বাতিল করে চিকিৎসকদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফিরে আনা সম্ভব নয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist