মহসীন শেখ, কক্সবাজার

  ২০ মার্চ, ২০১৮

রোহিঙ্গারা আড়ালে ইয়াবার ‘থাবা’

একসময় মোড়ের পানের দোকানে, মাদক কারবারিদের ঘরে এবং কোমরে গুঁজে মাদক ফেরিওয়ালারা বিক্রি করতেন গাঁজা। আর দামও ছিল অল্প। তাই উঠতি যুবক এবং পেশাদার মাদকসেবীরা অনায়সে পেয়ে যেত গাঁজার নাগাল। কিন্তু সেদিন বদলে গেছে। এখন হন্যে হয়ে খুঁজেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে গাঁজার সন্ধান মেলে না। তবে গাঁজার এই স্থান দখল করে নিয়েছে মরণনেশা ইয়াবা। এক সময়ের গাঁজার মতো শহর কিংবা অজপাড়া গাঁÑহাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবা। সেবনকারীও বেড়েছে বহুগুণ। এক দশকের বেশি সময় ধরে কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ ও উখিয়াসহ আরো কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে মরণনেশা ইয়াবা। এতে বাংলাদেশে একটি বড় ধাক্কা লাগে। এই ধাক্কায় টনক নড়ে প্রশাসনের। এ কারণে কয়েক দিন আগে ইয়াবার বিরুদ্ধে ‘অ্যাকশনে’ নেমেছিল প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে কয়েকজন ইয়াবা কারবারিও। কিন্তু কয়েক দিন যেতেই ওই ‘অ্যাকশনে’ ভাটা পড়ে। আর বেপরোয়া হয়ে ওঠে ইয়াবা কারবারিরা। কিন্তু গত বছরের আগস্ট থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে ইয়াবা কারবারিরা। রোহিঙ্গা নিয়ে পুরো প্রশাসন ব্যস্ত থাকার সুযোগে ইয়াবার পাচার আরো মারাত্মক আকারে বাড়িয়ে দেয় তারা।

সূত্র মতে, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজিবি ও পুলিশ ব্যস্ত হয়ে পড়লে টেকনাফ ও উখিয়ার ইয়াবার গডফাদাররা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে নির্বিঘেœ নিয়ে আসছে ইয়াবার বড় বড় চালান। এসব ইয়াবা সড়কপথ ও স্থলপথ এমনকি আকাশপথেও দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হচ্ছে।

জানা গেছে, গত এক বছরের বেশি সময়ে ধরে টেকনাফের চর এলাকায় পরিত্যক্ত ইয়াবা পাওয়ার ঘটনা বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিন এক বা একাধিক ইয়াবার ছোট-বড় চালান উদ্ধার করেছে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশ। তবে এর হোতারা বরাবরই থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ নিয়ে প্রশাসনের কতিপয় লোকজন জড়িয়ে রহস্যমূলক কাহিনীও প্রচলিত হয়েছে। পূর্বেও সেন্টমার্টিনে ইয়াবার প্রভাব দেখা না গেলেও সম্প্রতি সেখানে ইয়াবার থাবা হানা দিয়েছে। বেশ কয়েকটি পরিত্যক্ত ইয়াবার বড় চালান উদ্ধার করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত আড়াই মাসে শুধুমাত্র কোস্টগার্ড ২৫ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা জব্দ করেছে। এর ৯০ ভাগ পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। সেন্টমার্টিন, টেকনাফ এবং শাহপুরীর দ্বীপসহ উপকূল এলাকা থেকে এসব ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। বিজিবির ইয়াবা উদ্ধারের পরিমাণ আরো কয়েক গুণ হবে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ, টেকনাফের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত সব ইয়াবা ব্যবসায়ী এখন বীরদর্পে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারা মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বড় বড় চালান এনে অধিকাংশই সাগরপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সড়ক পথে কড়াকড়ি বাড়ায় সাগরপথকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে তারা। তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দহরম-মহরম সম্পর্ক রয়েছে। তারা প্রকাশ্যে ওঠা-বসাও করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ‘অ্যাকশন’ নেই।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ কে এম ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ইয়াবা নির্মূলের জন্য টেকনাফে পুলিশকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist