কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ১৯ মার্চ, ২০১৮

রোহিঙ্গা-ইয়াবায় ঝুঁকিতে নিরাপত্তা

প্রতিদিনই বাড়ছে কক্সবাজার-টেকনাফ সীমান্তবর্তী এলাকার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ঝুঁকি। ১০ লাখের বেশি শরণার্থী রোহিঙ্গার চাপ এবং লাখ লাখ পিস ইয়াবার চালানের তোড়ে ভেঙে পড়ছে এই অঞ্চলের স্বাভাবিক জনজীবন। শরণার্থী-উপদ্রুত এই এলাকায় বর্তমানে কয়েকটি সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয়-শরণার্থী দ্বন্দ্ব-সংঘাত অন্যতম। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায়ই মারপিট ও সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এছাড়া বেঁচে থাকার জন্য শরণার্থীরা মাদক, দেহ ব্যবসা, মানব পাচারে জড়িয়ে পড়ছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেওেছ, শরণার্থী-উপদ্রুত এলাকায় বর্তমানে কয়েকটি সমস্যা প্রকট হয়ে নিরাপত্তা বিঘিœত করছে। এর মধ্যে স্থানীয়-শরণার্থী দ্বন্দ্ব-সংঘাত অন্যতম। উভয় পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছাড়াও প্রায়ই মারপিট ও সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য শরণার্থীরা অবৈধ ও বিপজ্জনক পেশা বেছে নিচ্ছে। মাদক, দেহ ব্যবসা, মানব পাচার এসবের মধ্যে প্রধান। ফলে মাদকের পাশাপাশি অস্ত্র ও বিপজ্জনক পণ্যের চোরাচালান এবং লেনদেন এ অঞ্চলে বৃদ্ধি পেলে চরম নিরাপত্তা ঝুঁকির সৃষ্টি হবে বলে শঙ্কা স্থানীয়দের।

শরণার্থীবহুল সীমান্ত এলাকায় কর্মরত কয়েকটি এনজিওর প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতি স্থানীয় জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। স্কুল-কলেজের ছাত্রদের পাঠ্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তারা শরণার্থী সম্পর্কিত নানা পাঠ্য-বহির্ভূত কাজে জড়াচ্ছে। বিশেষ করে, স্থানীয় বেকার ও উঠতি বয়সের তরুণরা ক্যাম্পের মেয়েদের সঙ্গে প্রেম বা দৈহিক সম্পর্কে জড়িত হওয়ায় নানা জটিলতা ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এনজিওসহ অন্য কাজে আগত হাজার খানেক কর্মচারীর কেউ কেউ শরণার্থী পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করায় পরিস্থিতি স্পর্শকাতর হয়ে উঠছে। একটি দায়িত্বশীল সূত্র ইয়াবা ও মাদক পাচারের নেপথ্যে স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী শক্তির তৎপরতাকে দায়ী করে বলেছে, আশ্রয় গ্রহণকারী উদ্বাস্তু ব্যক্তি ও পরিবারকে চাপ ও প্রলোভন দিয়ে নানা অপকর্মে ব্যবহার করা হচ্ছে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের পেশাজীবী শ্রেণির কয়েক জন প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, সংঘাতময় উপদ্রুত এলাকায় চোরাচালান ও অপরাধ কমার বদলে বাড়ে। কারণ, সবাই দুর্যোগ মোকাবিলায় মনোযোগী থাকেন বলে স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা ও নজরদারি শ্লথ হয়। আর এ সুযোগটাই লুফে নেয় অপরাধীচক্র। আফগানিস্তান, সিরিয়ার উদাহরণ টেনে তারা বলেন, সেখানে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও আফিম বা অস্ত্র চোরাকারবার বন্ধ নেই। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত এলাকাতেও শরণার্থী সমস্যার ভেতর দিয়ে চলছে অপরাধমূলক নানা তৎপরতা এবং দিনে দিনে বাড়ছে বিভিন্ন রকমের জননিরাপত্তার ঝুঁকি।

অভিজ্ঞ মহলের মতে, ক্রমবর্ধমান জননিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা না হলে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিশাল সীমান্ত এলাকায় অচিরেই চরম সামাজিক অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতার উদ্ভব হতে পারে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist