বিবিসি
ঢাকা কেন ব্যয়বহুল?
জীবনযাত্রার ব্যয়ের দিক থেকে দিল্লি, মুম্বাই, কুয়ালালামপুর কিংবা দোহা বা মস্কোর তুলনায় ঢাকা শহর অনেক বেশি ব্যয়বহুল বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের চালানো জরিপের ফলাফল থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানীর অবস্থান ৭২তম। ভারতের প্রধান চারটি শহর, শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো আর পাকিস্তানের করাচি শহরের অবস্থান এই তালিকায় ঢাকার নিচে।
দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ১৫০টি পণ্যের দাম নিয়ে ১৩৩টি শহরে এই জরিপ চালায়।
সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরে হিসেবে এই তালিকায় শীর্ষ পদ ধরে রেখেছে সিঙ্গাপুর। গত পাঁচ বছর ধরেই সিঙ্গাপুরকে কোনো শহর হঠাতে পারেনি। এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের তিনটি শহর- হংকং, সৌল এবং সিডনি এই তালিকার প্রথম ১০-এর মধ্যে রয়েছে।
উপমহাদেশের অনেক বড় শহরের তুলনায় ঢাকার জীবনযাত্রার ব্যয় কেন এত বেশি? বিষয়টির ব্যাখ্যা করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, এর পেছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি কারণ। প্রথমত, বাংলাদেশের আয় বেড়েছে। কিন্তু তার বিপরীতে বিভিন্ন ধরনের সেবা বা পণ্যের সরবরাহ বাড়েনি। সম্পদের বৈষম্য আয়ের বৈষম্যকেও ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, ‘বাংলাদেশীদের মধ্যে উচ্চবিত্তদের হাতে এখন অনেক বেশি অর্থ, কিন্তু তারা যা চান- যেমন বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি যথেষ্ট নেই।’ দ্বিতীয় প্রধান কারণটি হলো, টাকার মূল্যমানের স্থিতিশীলতা। ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান এতদিন ৭৯-৮২ টাকার মধ্যে ছিল। কিন্তু সম্প্রতি এটি বাড়ছে। রেমিট্যান্স কমছে, রফতানি আয়ও কমছে। ফলে এরও প্রভাব পড়ছে।
ড. ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশে যেসব পণ্যের মধ্য দিয়ে মজুরি নির্ধারিত হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি পণ্য হচ্ছে চাল এবং তেল। বাংলাদেশে চালের দাম আন্তর্জাতিক বাজার, এমনকি ভারতের বাজারের দামের চেয়েও বেশি। এটা জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়েছে অনেকখানি।
তেলের মূল্য বৃদ্ধিও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির আরেকটা কারণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ডলারনির্ভর জীবন যাদের তাদের কোনো সমস্যা হবে না, সতর্ক করেছেন তিনি। তার মতে, জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লে বিপদে পড়বে মধ্যবিত্তরা।
"