আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দলীয় কার্যালয়েই ঠাঁই নিলেন ত্রিপুরার ‘মানিক’
তিনি মানিকই বটে! ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সদ্য বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার একেবারেই সাদাসিধে জীবনযাপনে অভ্যস্ত। সবচেয়ে গরিব মুখ্যমন্ত্রীর খেতাবটাও তারই। টানা ২০ বছর মুখ্যমন্ত্রী থেকেও কোনো সম্পদ নেই তার। এমনকি নিজের কোনো বাড়ি-গাড়িও নেই। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিদায় নেওয়ার পর স্ত্রীকে নিয়ে এক রুমের দলীয় গেস্ট হাউসে উঠেছেন। সেখানে যা রান্না হবে সেটাই খাবেন জনতার এই ‘মানিক’। আগরতলার কাছে মানিক সরকারের ৯০০ বর্গফুটের একটি পৈতৃক বাড়ি আছে, সেটা কাঠের তৈরি। ওই বাড়িতে বোনের প্রাপ্য ৪৫০ বর্গফুট বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। এত বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকার পরও সে বাড়িতে কোনো পরিবর্তন আনেননি। এদিকে, নির্বাচনী অঙ্কে তিনি ক্ষমতায় আসতে না পারলেও তার প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা কমেনি। তার এই সিদ্ধান্তে সে শ্রদ্ধা যেন আরো বেড়েছে। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তার টাকার পরিমাণও ক্রমাগত কমেছে। স্ত্রী সরকারি চাকরি করতেন। মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী হয়েও তিনি বাসে চলাফেরা করতেন।
মানিক সরকারের বাড়িভর্তি ছিল শখের বই। তার স্ত্রী পাঞ্চালি ভট্টাচার্য জানান, জায়গা না থাকায় বেশ কয়েকটি বই দিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকারের বীরচন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে। লেনিন রচনাবলী, দাস ক্যাপিটাল, কার্ল মার্কসসহ অনেক বই দিয়েছেন সিপিএমের দলীয় লাইব্রেরিতে। বাংলাদেশের কয়েকটি প্রকাশনার বেশ কিছু বই রেখেছেন নিজেদের কাছে। আগরতলার কৃষ্ণনগরে পাঞ্চালির বাপের বাড়ির একটি ঘরে ঠাঁই পাচ্ছে সেসব গ্রন্থ।
দলের সভাপতি হিসেবে পার্টি থেকে ব্যয় নির্বাহের জন্য দেওয়া হয় কিছু টাকা। সেটা দিয়েই চলবে তার প্রতি মাসের খরচ।
ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর জানিয়েছেন, রাজ্য পার্টি অফিসের গেস্ট হাউসের এক কামরা ঘরই আপাতত মানিক বাবুর সংসার। ক্যান্টিনে যা রান্না হবে তাই খাবেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলে বাড়তি কোনো সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার পক্ষপাতী নন তিনি।
"