নিজস্ব প্রতিবেদক
৭ মার্চ ছাত্রীর শ্লীলতাহানি
মামলা : চিহ্নিত উত্ত্যক্তকারীরা
রাজধানীর বাংলমোটরে ৭ মার্চ উদ্যাপন উপলক্ষে বের হওয়া মিছিল থেকে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে রমনা থানায় অদিতি বৈরাগী নামের ওই ছাত্রীর বাবা মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, জড়িতদের ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
মামলায় অদিতি বৈরাগীর বাবা অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন রাত ৯টায় কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে তিনি জানতে পারেন মেয়ে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেইলি রোড ক্যাম্পাস থেকে ফেরার সময় শান্তিনগর মোড়ে বাস না পেয়ে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত হেঁটে যায়। সেখানেও সে বাস না পেয়ে অফিসার্স ক্লাবের সিগন্যালে এসে ফার্মগেটগামী একটি বাসে ওঠে। বাসটি মগবাজার হয়ে বাংলামোটরের দিকে যাওয়ার সময় তীব্র যানজটে পড়ে। তখন তার মেয়ে বাস থেকে নেমে বাংলামোটরের দিকে যাওয়ার সময় আনুমানিক বেলা আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে ৮৯ নম্বর নিউ ইস্কাটন বাসার সামনের ফুটপাতে সাদা টি-শার্ট পরা আনুমানিক ২৫-৩০ বছর বয়সী অন্তত ১৫ জন ছেলে তাকে টিজ করতে থাকে।
ভুক্তভোগীর বাবার অভিযোগ, এক পর্যায়ে তার মেয়ের সঙ্গে ওই যুবকদের টানাহেঁচড়া চলে। এ সময় তার স্কুল ড্রেসের শোল্ডার ও দুটি বোতাম ছিঁড়ে ফেলে তারা। একজন ট্রাফিক পুলিশ তাকে উদ্ধার করে একটি বাসে তুলে দিলে সে বাসায় আসে। মামলায় তিনি আরো বলেন, ‘আমার মেয়ে এ ব্যাপারে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়। আমরা মেয়ের শ্লীলতাহানি করার কারণে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এজাহার দায়ের করলাম।’
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জানিয়েছেন, শ্লীলতাহানির ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং জড়িতদের ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে প্রামাণ্য দলিল হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি উদ্যাপনে গত বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সমাবেশস্থলমুখী মিছিল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে নারীদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা তাদের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এর মধ্যে অদিতি বৈরাগীর স্ট্যাটাস নিয়ে রীতিমতো হইচই শুরু হয়।
ইতোমধ্যে ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করার কথা জানিয়েছেন খোদ স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির দাবি, এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হুশিয়ারঅ উচ্চারণ করে বলেছেন, এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, ‘এটি যেহেতু সমাবেশস্থলের বাইরে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ঘটেছে, সেজন্য এটি দলীয় বিষয় নয়, তবে সরকারের দায় আছে।’
"