প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ব্রিটেনের
হারানো বাজার ফিরে পাওয়া নিয়ে সংশয়
নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নিয়ে অন্যান্য দেশ এ বাজারে ঢুকে পড়েছে। ফলে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে গেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপত্তার ঘাটতির কথা উল্লেখ করে এ দেশ থেকে কার্গোবাহী বিমান সরাসরি যুক্তরাজ্যে পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার গণভবনে যে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন, সেখানেও তিনি এসব তথ্য জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে বিবিসি বাংলায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ থেকে ব্রিটেনে খাদ্য, শাকসবজি আমদানি করতেন যে ব্যবসায়ীরা মূলত তারাই সমস্যায় পড়েছিলেন। প্রায় দুই বছর পর তুলে নেওয়া হয়েছে সেই নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু পানি অনেকদূর গড়িয়ে গেছে, এখন ব্যবসায়ীরা কি আবার আগের মতো সব পণ্য আমদানি করতে পারবেন? তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিয়ে ব্রিটেনে ব্যবসা করেন রফিক হায়দার। তিনি এ-সংক্রান্ত একটি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। রফিক হায়দার বলেন, নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নিয়ে ইতোমধ্যে অন্যান্য দেশ এ বাজারে ঢুকে পড়েছে। ফলে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে গেছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘এ অবস্থার কারণে ব্যবসা অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে আগে যত মালামাল যেত নিষেধাজ্ঞার ফলে অন্যান্য দেশ যেমন ভারত, পাকিস্তান, জর্ডান, হল্যান্ড, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশ এসব পণ্য উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘যেসব দেশ এসব পণ্যের ব্যাপারে আগে জানত না সেসব দেশের সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে মার্কেটটা ধরে ফেলেছে। সুতরাং বিরাট একটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে গেছে বাংলাদেশ।’
দুই বছর ধরে এ নিষেধাজ্ঞার ফলে বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক নিম্নমুখী হয়ে গেছে। একসময় এমন কিছু সবজি ছিল; যা বাংলাদেশের বাইরে অন্য কোনো দেশ থেকে যুক্তরাজ্যের বাজারে ঢুকতে পারত না। এর মধ্যে রয়েছে বরবটি, শিমসহ বেশ কয়েক ধরনের সবজি। এখন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর সেই বাজার ফিরে পাওয়া কি কঠিন হবে? এমন প্রশ্নে রফিক হায়দার বলেন, অন্যান্য দেশ চেষ্টা করছে যাতে তাদের বাজার বন্ধ হয়ে না যায়। তারা সাবসিডি দিচ্ছে, বাজার মনিটর করছে, বাজার ধরে রাখার জন্য।
বাংলাদেশ থেকে এ ধরনের কি পরিমাণ পণ্য আমদানি করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কুড়ি বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এ ধরনের পণ্যের চাহিদা ছিল ৪০ মিলিয়ন ডলারের। কুড়ি বছর পরেও এখনো সেই ৩০-৪০ মিলিয়নে আটকে আছে বাংলাদেশ। বাজার কিন্তু ৪০০ মিলিয়ন ডলারের।’
তার মতে, বাংলাদেশ থেকে যারা রফতানি করেন, তাদের অধিকাংশই যুক্তরাজ্যের চাহিদার পরিমাণ সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেননি। তারা মনে কওে, স্থানীয় বাজারে যেভাবে পণ্য পাঠিয়ে দেয়, সেভাবে পাঠালেই হয় কিন্তু যুক্তরাজ্যের বাজার আর স্থানীয় বাজার তো সমান নয়। এ বিষয়গুলো যাদের দায়িত্ব মনিটর করার তারা তা সঠিকভাবে না করায় বাজারটি নষ্ট হয়ে গেছে বলে যুক্তরাজ্যের আমদানিকারকরা মনে করেন।
"