শাহ্জাহান সাজু

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

দাম সহনীয় রাখতে এলএনজিতে মূসক ছাড়া অন্য কর থাকছে না

খুচরা পর্যায়ে গ্যাসের দাম সহনীয় রাখতে আমদানিকৃত এলএনজির (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ছাড়া অন্য কোনো কর আরোপ করতে চায় না সরকার। এজন্য আমদানি পর্যায়ে শুধু ভ্যাট আরোপের সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে এনবিআর হতে প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ-বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সরকারের এই মনোভাবকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন ব্যবসায়ীরা ও সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বিজিএমইর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তটি অবশ্যই ইতিবাচক। এই সিদ্ধান্তটি দেশের শিল্প বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এটি গ্যাসের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ভূমিকা থাকবে। তবে এক্ষেত্রে ভ্যাটও থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি। কারণ গ্যাসের দাম কম থাকলে শিল্প উদ্যোক্তারা শিল্প-প্রতিষ্ঠান নির্মাণে উৎসাহিত হবেন। ফলে বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ভ্যাট ছাড়া অন্য কোনো কর না থাকলে, সে ক্ষেত্রে দামের ওপর কিছুটা প্রভাব তো ফেলবেই। তবে আমদানির পর সেটা পরিষ্কারভাবে বলা যাবে বলে জানান তিনি।

জানা যায়, চলতি বছরের মাঝামাঝি নাগাদ জাতীয় গ্রিডে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের আশা করছে সরকার। এ লক্ষ্যে কক্সবাজারের মহেশখালীতে নির্মিত হচ্ছে ভাসমান টার্মিনাল। এর বাইরে টার্মিনাল নির্মাণের কথা রয়েছে ভারতের দুটি ও ব্যক্তিখাতে বাংলাদেশের আরো একটি কোম্পানির। দেশে শিল্প ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের পরিসর বাড়ছে। ফলে গ্যাসের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। তবে নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান না পাওয়ায় গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে বড় ধরনের পার্থক্য থাকছে। শিল্প-বাণিজ্য, বিদ্যুৎ ও আবাসিকসহ সব খাত মিলে বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৩২০ থেকে ৩৫০ কোটি ঘনফুট। এর বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে ২৭০ কোটি ঘনফুটের মতো। অর্থাৎ ৬০ থেকে ৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি থাকছে। জ্বালানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে তাই এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা করছে সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করছে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড। বার্ষিক হারে টার্মিনালটি ভাড়ায় ব্যবহার করবে পেট্রোবাংলা। এলএনজির কাঁচামাল আমদানি করা হবে কাতার থেকে। এ বিষয়ে কাতারের রাশ গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তিও করেছে পেট্রোবাংলা।

সূত্র জানায়, দেশীয় কোম্পানি হিসেবে সামিট পাওয়ারও মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের অনুমোদন পেয়েছে। গত ২০ এপ্রিল এ নিয়ে পেট্রোবাংলার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সামিট গ্রুপ। চুক্তি সম্পাদনের ১৮ মাসের মধ্যে বিল্ট ওন অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার (বিওওটি) ভিত্তিতে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা। দেশীয় কোম্পানি সামিট পাওয়ারের পাশাপাশি বাংলাদেশে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের অনুমোদন পেয়েছে জ্বালানি খাতে ভারতের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেড। কুতুবদিয়া দ্বীপে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করতে চায় ভারতীয় কোম্পানিটি। কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ১০০ কোটি ঘনফুট ক্ষমতার ল্যান্ড বেইজড এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করতে চায় ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোনেট এলএনজি লিমিটেডও। পেট্রোবাংলার সঙ্গে এ-সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকও সই করেছে প্রতিষ্ঠানটি। টার্মিনাল নির্মাণে পেট্রোনেটকে ৫০ হেক্টর জমি দেওয়া হবে। জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ টার্মিনালের জন্য পেট্রোনেট এলএনজি আমদানি করবে কাতার থেকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist